News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

শুক্রবার চাঁদ দেখা গেলে শনিবার ঈদ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | সময়ের নারায়ণগঞ্জ রিপোর্ট : প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৩, ১২:০১ এএম শুক্রবার চাঁদ দেখা গেলে শনিবার ঈদ

২১ এপ্রিল শুক্রবার রমজানের ২৯ তারিখ। হতে পারে এ বছরের রমজান মাসের শেষদিন। শুক্রবার চাঁদ দেখা গেলে শনিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখে রোজা রাখা এবং চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ করার কথা হাদিসে উল্লেখ আছে। তাই রমজানের চাঁদ দেখে রোজা শুরু করা হয় আর শাওয়ালের চাঁদ দেখে ঈদ করা হয়ে থাকে। কিন্তু মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না গেলে রমজান মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করার জন্য রাসূল (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন।

বুখারি ও মুসলিম শরিফে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) ও হযরত ইবনে উমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, 'তোমরা রোজা রাখবে না যতক্ষণ না চাঁদ দেখতে পাবে এবং রোজা ভাঙবে না যতক্ষণ চাঁদ দেখতে পাবে না। (২৯ তারিখ) আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে সেই মাসের (ত্রিশ) দিন পূর্ণ করে নিও।'

তাবেয়ী তাউস বলেছেন, 'আমি মদিনায় হযরত ইবনে ওমর ও হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তাদের কাছে এক ব্যক্তি রমজান মাসের চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দেয়। তারা দুইজনই তা গ্রহণ করলেন এবং বললেন, 'রাসূলে করীম (সা.) রমজান মাসে চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজনের সাক্ষ্য গ্রহণের অনুমতি দিয়াছেন। কিন্তু রোজা খোলার ব্যাপারে দুইজনের সাক্ষ্য ছাড়া রোজা খোলার অনুমতি দিতেন না।' চাঁদ দেখা গেলে দীর্ঘ একমাসের তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষণ কোর্স রমজান মাসের রোজা পালনের সামগ্রিক ইবাদতেরও শেষ হবে। উদ্দেশ্য থাকবে বাকি ১১ মাস যেন এর আলোকে নিজেদের পরিচালিত করতে পারি। যে তাকওয়ার গুণাবলী আমরা রোজা থেকে অর্জন করেছি, বাকি জীবন যেন সে আলোকে পরিচালিত করতে পারি সে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

ইমাম বুখারী ও মুসলিম স্বীয় গ্রন্থে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, 'নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহ ময়দানে চলে যেতেন। সর্বপ্রথম তিনি নামাজ পড়াতেন। নামাজ পড়ানো শেষ করে লোকদের দিকে ফিরে খুতবা দেয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়াতেন। তখন লোকেরা যথারীতি নিজেদের কাতারে বসে থাকত। এ সময় নবী করিম (সা.) লোকদের ওয়াজ নসিহত করতেন, শরিয়তের আদেশ নিষেধ শোনাতেন। তখন যদি কোনো সৈন্যবাহিনীকে কোথাও পাঠাবার ইচ্ছা করতেন তাহলে তা পাঠাতেন এবং কোনো বিশেষ বিষয়ে নির্দেশ জারি করার উদ্দেশ্য থাকলে তাও করতেন। অতঃপর তিনি ঈদগাহ হতে প্রত্যাবর্তন করতেন।'

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত, 'রাসূলে করীম (সা.) ঈদের নামাজের ময়দানে পায়ে হেঁটে যেতেন এবং হেঁটে ফিরে আসতেন।' ঈদুল ফিতরের দিনে সকাল বেলা নামাজের জন্য বের হওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া সুন্নাত। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেছেন, 'রাসূলে মাকবুল (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বে আহার করতেন।' ঈদুল ফিতরের সকালবেলা কিছু খাওয়ার তাৎপর্য সুস্পষ্ট। দীর্ঘ ১ মাস রোজা পালন করা হয়েছে। এ সময়ে সকাল বেলাসহ সারাদিনে কিছুই পানাহার করা হয়নি। আজ এ ঈদের দিনে সকালবেলা কিছুই না খেলে এদিনও রোজার মতোই মনে হবে। অথচ মন মানসিকতা ও মনস্তত্ত্বের দিক দিয়ে এটি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। সহিহ আল বুখারিতে হযরত জাবের (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে, 'নবী করিম (সা.) ঈদের দিনে ময়দানে যাতায়াতের পথ পরিবর্তন করতেন।' অর্থাৎ যে পথে ঈদগাহে যেতেন সে পথে ফিরে আসতেন না। ফিরে আসতেন অন্য পথ দিয়ে।

ঈদের দিনে উচ্চঃস্বরে তাকবির বলা রাসূল (সা.)-এর আমল হতে প্রমাণিত। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলে করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'তোমরা তোমাদের ঈদসমূহকে তাকবির বলার সাহায্যে সুন্দর আনন্দমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ করে তোল।' ইমাম যুহরী বলেছেন, 'নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে ঘর থেকে বের হয়ে নামাজের স্থানে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবির বলতে থাকতেন।'

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যেদিন ঈদুল ফিতরের দিন সেদিন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করতে থাকেন। অতঃপর বলেন, হে আমার ফেরেশতাগণ! মজদুরের পুরস্কার কি, যে তার কাজ পুরোপুরি করেছে? তখন ফেরেশতাগণ বলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! তার পুরস্কার তাকে পুরোপুরি এর প্রতিদান দেয়া। এবার আল্লাহ বলেন, হে আমার ফেরেশতাগণ! আমার দাস ও দাসীরা তাদের ওপর চাপানো কর্তব্য পালন করেছে। তারপর তারা উচ্চৈঃস্বরে (তাকবির) ধ্বনি দিতে দিতে দু'বার সালাতের জন্য (ঈদগাহে) রওনা হয়েছে। আমার সম্মান ও গাম্ভীর্যের কসম! এবং আমার উদারতা ও উচ্চ মর্যাদার কসম! আমি তাদের ডাকে অবশ্যই সাড়া দেব। অতঃপর তিনি বলেন, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমাদের পাপগুলো পুণ্য দিয়ে বদলে দিলাম। নবী (সা.) বলেন, তাই তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরতে থাকে (বায়হাকীর শুআবুল ঈমান, মিশকাত ১৮৬-১৮৩ পৃ.)।

Islams Group
Islam's Group