News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০

বিএনপি করে ৩৩ মামলার আসামী


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২, ১১:১২ পিএম বিএনপি করে ৩৩ মামলার আসামী

ছাত্রদলের একসময়ের ডাকসাইটের নেতা ছিলেন রাশিদুর রহমান রশু। ছাত্রজীবন শেষ করে এবার যুবকে পরিণত হয়েছেন তিনি। বিএনপি দলীয় আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে এই বয়সেই ৩৩টি মামলার আসামী হয়েছেন। সেই সাথে অসংখ্যবার গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন দিনের পর দিন।

এখনও সেই মামলার গ্লানি টেনে চলছেন। তার সময়ই কাটে যেন আদালতের এক বারান্দা থেকে আরেক বারান্দা। তারপরেও যেন তার মূল্যায়ণ নেই যুবদলে। একবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেও পরেরবার আর তাকে কমিটিতেই রাখা হয়নি। বর্তমানে তিনি পদ পদবী ছাড়াই রয়েছেন রাশিদুর রহমান রশু।

দলীয় সূত্র বলছে, ৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার যুগ্ম আহবায়ক ও পরে সভাপতি হন রাশিদুর রহমান রশু। ওই সময়ে নারায়ণগঞ্জ থানা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, পরে তিনি মহানগরের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা চলমান রয়েছে। কারাভোগ করেছেন ১২ থেকে ১৫ বার। ২০১৪ সালের গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন রশু। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানার মামলায় টানা চারবার জেলগেট থেকে গ্রেফতার এবং অনেকবার রিমান্ডে গিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৪ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে বিএনপি ঘোষিত হরতালের মিছিল থেকে প্রথম গ্রেফতার হন। এরপর ২০১২ সালের ১২ মার্চ ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচি থেকে গ্রেফতার। এভাবে একে একে ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর, ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর, ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর গ্রেফতার হন।

২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ২৪ টি মামলা নিয়ে ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পন করে কারাগারে প্রেরিত হন। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর মিছিল থেকে আবারো গ্রেফতার।

২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল তার চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে সাইনবোর্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন এবং সেদিনই তার মা ইন্তেকাল করেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও ৯ টি মামলা আসামী হন। সবশেষ ২০২২ সালের ১০ জুন শহরের মাসদাইর বাজার থেকে গ্রেফতার হয়ে অনেকদিন কারাভোগ শেষে জামিন লাভ করেন।

এসকল মামলায় হাজিরা দিতে প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত তাকে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ার এক বারান্দা থেকে অন্য বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। সেই সাথে গ্রেফতারের ভয় তো থেকেই যায়। তবে এত কিছুর পরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলে তিনি মূল্যায়ণের বাহিরেই রয়ে গেছেন।

দলীয় সূত্র বলছে,  ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মনতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন শোখন, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ৫ মাস পরই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে কখনই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আহবায়ক কমিটি দিয়েই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কার্যক্রম পরিচালিত হত। তবে এবার মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের নেতৃত্বে সেই দীর্ঘ দিনে রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে।

এরপর ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারী সেই কমিটি বিলুপ্ত করে ওই বছরের ১৬ নভেম্বর যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এই এই কমিটিতে মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তকে আহবায়ক এবং মহানগর বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করা হয়।

সেই সাথে কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, সহ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ।

কিন্তু এখানে জায়গা দেয়া হয়নি ছাত্রদলের একসময়ের ডাকসাইটের নেতা ছিলেন রশিদুর রহমান রশুকে। সেই সাথে অন্য কোনো কমিটিতেও তাকে রাখা হয়নি। আগামীতে কোনো কমিটিতে রাখা হবে কিনা সে ব্যাপারেও কোনো নিশ্চয়তা নেই। একজন ত্যাগী নেতা হয়েও পদ পদবীর বাইরে থাকা দলের জন্যই অমঙ্গলজনক মনে করছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

Islams Group
Islam's Group