News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০

বহিষ্কারেও কদর কমেনি তৈমূরের


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২, ১০:৩০ পিএম বহিষ্কারেও কদর কমেনি তৈমূরের

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে আবারও আলোচনায় আসতে যাচ্ছেন নাসিক নির্বাচন করে বহিষ্কৃত হওয়া সিনিয়র নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। জেলাজুড়ে আলোচিত এবং হেভিওয়েট নেতা হিসেবে বিবেচিত তৈমূর আলম খন্দকারের মাধ্যমে মহানগর বিএনপিতে নতুন বলয় তৈরি হতে যাচ্ছে। দল থেকে তাকে বিদায় দেয়া হলেও দলের প্রতি তার টান কমেনি একটুও। উল্টো বিএনপিতে থাকা তার অনুসারী ও ত্যাগী নেতাদের নিয়ে আবারও মাঠে নামতে যাচ্ছেন তিনি।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর মহানগর বিএনপির কমিটি প্রকাশিত হতেই তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠে নারায়ণগঞ্জ জুড়ে। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই অন্তত ১৫ জন সরে দাঁড়ায় কমিটি থেকে। যার নেপথ্যে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় তৈমূর আলম খন্দকার ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে। দুই নেতাই নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী বিশাল কর্মীবাহিনী সম্পন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত। আর উভয়ের এমন মেলবন্ধন নারায়ণগঞ্জের কালাম পরিবার এবং খন্দকার পরিবারের একত্রিত হওয়াকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন।

সূত্র বলছে, নতুন মহানগর বিএনপির কমিটিতে বহু ত্যাগী নেতাকর্মী মাইনাস হয়েছেন। একই সাথে বিতর্কিত, দুর্বল ও অযোগ্য নেতৃত্ব উঠে এসেছে এই কমিটির ভেতর। ফলে এই কমিটির বিপরীতে নতুন কমিটি দাঁড় করাতে হলে দরকার হবে নতুন নেতৃত্ব। আর সেই জন্য তৈমূর আলম খন্দকারকেই আবার বেছে নিয়েছেন বিএনপি নেতারা। কারণ এই মুহূর্তে তৈমূর আলম ছাড়া আর কোন আকর্ষণীয় নেতা নেই, যার কথায় সকল বলয়ের নেতাকর্মীরা এক কাতারে চলে আসবেন।

তৈমূর ও কালাম বলয়ের অনুগামীরা বলছেন, এই মুহূর্তে আবুল কালাম বেশ অসুস্থ ও শারীরিকভাবে দুর্বল। কালাম বলয়ের উত্তরসূরি হিসেবে পরিচিত আছেন আবুল কাউসার আশা। কিন্তু তিনি এখনও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতির পদ অতিক্রম করে মহানগরে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তুত নন। অন্যদিকে খন্দকার বলয়ে তৈমূর আলমের পরে আছেন খোরশেদ খন্দকার। তিনিও মামলায় বেশ দুর্বল হয়ে আছেন। ফলে এই মুহূর্তে হাল ধরতে পারেন এমন নেতা হচ্ছেন আতাউর রহমান মুকুল ও তৈমূর আলম খন্দকার। উভয়ের মধ্যে বয়স ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে তৈমূর আলম খন্দকার অধিক সিনিয়র হওয়ায় তার হাতেই উঠেছে গুরুদায়িত্ব।

দলের বাইরে থেকেও দায়িত্ব পালনে একটুও পিছপা হননি তৈমূর। দলের প্রতি অকৃত্তিম ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধ থেকে এগিয়ে এসেছেন মহানগর বিএনপিকে বাঁচাতে। সেই আহ্বানে একে একে সাড়া দিয়েছেন ১৫ জন নেতা। সহসাই আরও ৫ জন বিএনপি নেতা এই কমিটি থেকে সরে দাঁড়াবেন বলেও শোনা যাচ্ছে। সিংহভাগ নেতাকে এই কমিটি থেকে সরে আনতে পারলেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে বর্তমান আহবায়ক কমিটি। এরপরে ত্যাগী ও সব বলয়ের নেতাদের সাথে নিয়ে গঠন করা হবে মহানগর বিএনপির নতুন সাংগঠনিক কাঠামো।

ইতোমধ্যে যেসব নেতারা কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তারা হলেন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, যুগ্ম আহবায়ক হাজী নুরুদ্দিন, আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউসার আশা, সদস্য বিল্লাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম রিপন, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মনোয়ার হোসেন শোখন, ফারুক হোসেন, হাজী ফারুক হোসেন, হান্নান সরকার, আওলাদ হোসেন, আনিসুর রহমান মোল্লা ও শরীফুল ইসলাম শিপলু।

১৮ সেপ্টেম্বর তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় আয়োজিত মিটিং এ তৈমূর আলম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন বিএনপির কমিটি করতে হলে এই নারায়ণগঞ্জে আমাদের লাগবে। যদি গণজোয়ার আনতে হয় তাহলে আমাদের লাগবে। আমরাই বিএনপিতে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছি। আজ তারা অনেক বড় বড় কথা বলে। যারা দুই কোটি টাকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল তারাই এখন নেতা, আমরা হয়ে গেছি অবাঞ্ছিত। আমি বহিষ্কার হলেও বিএনপি থেকে নড়বো না এবং বিরোধীতা করবো না। আমি যতদিন আছি বিএনপিতে থাকবো এবং দলের জন্য কাজ করে যাব।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তৈমূর আলম খন্দকারের বাসায় যেই ১৫ জন পদত্যাগ করেছেন তারা সবাই খন্দকারপন্থী নন। এখানে আবুল কালাম এবং অন্যান্য ত্যাগী নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। তাদের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছেন তৈমূর আলম খন্দকার। আর সেই কারণেই তৈমূরের কদর বেড়েছে বিএনপিতে। বহিষ্কার হবার পর অনেকেই খন্দকার পরিবারের অবসান দেখলেও বাস্তবে তার কদর কমেনি একটুও।

Islams Group
Islam's Group