নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া। নারায়ণগঞ্জ-১ আসনটি মূলত রূপগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীক। আর এ উপজেলাতেই তিনবার বেশ দাপটের সঙ্গে চেয়ারম্যান হয়েছেন শাহজাহান। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়াতে তাঁর সঙ্গে সাধারণ মানুষেরও রয়েছে বেশ সখ্যতা। সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দুটি সমাবেশে বিপুল নেতাকর্মী নিয়ে রীতিমত চমক দেখিয়েছেন তিনি। এছাড়া বিএনপি ও জামায়াতের চলমান অবরোধ হরতালের কর্মসূচীতেও নিয়মিত মিছিল সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রেখেছিলেন শাহজাহান ভূইয়া।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-১ আসন রূপগঞ্জ উপজেলার তারার ও কাঞ্চন পৌরসভা এবং সাত ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত হয়েছে। এ আসনে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭০১ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪’শ ৯৬ ও নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২’শ ৪ জন। এদের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের একজন ভোটার রয়েছেন।
এ আসনে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল মতিন চৌধুরী ৬০ হাজার ৫৩২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫৩ হাজার ৩৬৯ ভোট পেয়ে তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আক্তারুজ্জামান। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব) কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম ৬৪ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫৩ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মতিন চৌধুরী। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুল মতিন চৌধুরী ৮৯ হাজার ১৩৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৭৮ হাজার ১০৪ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব) কে এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৭১ ভোট পেয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৯৫ হাজার ৬৭৩ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শওকত আলী। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ১৬ হাজার ৪৩৪ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী কাজী মনিরুজ্জামান।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে শাহজাহান ভূইয়ার সঙ্গে সকলের রয়েছে সুসম্পর্ক। সে কারণে ভোটের মাঠে তিনি এগিয়েই থাকবেন। এছাড়া নেতাকর্মীদের সঙ্গেও রয়েছে তার হৃদ্যতা। যদিও ইদানিং তার সঙ্গে সেখানকার এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর বৈরিতা রয়েছে। ২০০৮ সালের আগে কে এম শফিউল্লাহর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হলে গাজীকে নিয়ে মাঠে নামেন। শুরু হয় গাজীর জনপ্রতিনিধির পথচলা। এর পর তাকে পেছনে ফেরাতে হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :