News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

ভোটে জয়ী ফলাফলে হার


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৩, ০৬:২৩ পিএম ভোটে জয়ী ফলাফলে হার

বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রতীকের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে পরাজিত তৎকালীন বিএনপি নেতা ও বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন দেখেছি এ নির্বাচন এসপি করে দিয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ কীভাবে ভোট জালিয়াতি করে, ভোটকেন্দ্র দখল করেছে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যে থাকে না তা শুধু আমি না অন্যান্য প্রার্থীরাও বলেছে। আমরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। নির্বাচনে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য কমিশনকে আরও কাজ করতে হবে। আমরা কমিশনের পরিস্থিতি দেখছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচনে আসবো কি আসবো না সেই সিদ্ধান্ত নেবো।

তৈমূর দাবী করেন, তিনি ভোটে জিতলেও ফলাফলে তাকে পরাজিত করা হয়েছি।

শনিবার (৪ নভেম্বর) তিনি এসব কথা বলেন। তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমরা ২০১৪ ও ১৮ এর পুনরাবৃত্তি চাই না। চাই একটা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক ও জনগণকে আস্থায় আনতে পারে এই ধরনের নির্বাচনী পরিবেশ। নির্বাচন কমিশন আমাদের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করবো। আমরা দেখবো, যে তারা বাস্তবিকপক্ষে জনগণকে আস্থায় আনার জন্য কি ধরনের প্রস্তুততি নিয়েছে।

২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর দাপুটে জয়ে পরাভূত হন তৈমূর আলম খন্দকার। ১৯২ কেন্দ্রের সবগুলোর ফলাফলে নৌকা পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট। আর হাতি প্রতীকে তৈমূর পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট।

ভোটের পর প্রতিক্রিয়া তৈমূর বলেন, আপনারা দেখবেন আমি ঘটনাগুলো আপনাকে জানিয়েছি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আমার সমন্বয়ককে কাগজ সহ গ্রেফতার করা হয়। তার মাধ্যমেই শুরু হয় এবং আমার লোকজন প্রতিদিনই গ্রেফতার হতে থাকে। আপনারা দেখবেন হেফাজতের মামলা দেয়া হয়েছে সকলকে। এদের মধ্যে হিন্দু লোকও আছে। এখন দেখা যায় মুসলমান তো করেই হিন্দুরাও হেফাজত করে। সকাল থেকে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্দরের সমন্বয়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার চিফ এজেন্টের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। এ অবস্থায় একটা মানুষ স্বতন্ত্র দাড়িয়ে কীভাবে ঠিক থাকতে পারে। তার পরেও জনগন আমাকে সমর্থন দিয়েছে। আমার লোকজন বাড়িতে থাকতে পারেনি। এটিএম কামালের মত লোককে ঘেরাও করা হয়েছে গ্রেফতার করার জন্য। তার বিষয়ে আগেও মন্তব্য করিনি এখনও করবো না। এটা খেলা হয়েছে সরকার বনাম জনগণ, সরকার বনাম তৈমুর আলম খন্দকার। আমি সিটি করপোরেশনের জন্য কী করেছি তা তাকে জিজ্ঞেস করেন। নারায়ণগঞ্জবাসী এগুলো জানে।

১৬ জানুয়ায়ী অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র প্রার্থী হন। বিএনপি তাকে প্রথমে ইঙ্গিত দিলেও পরবর্তীতে তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করেন। কিন্তু এই নির্দেশনা না মেনেই তৈমূর নির্বাচনী মাঠে থেকে যান। সেই সাথে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য স্লোগান হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরজুড়ে। তারপরেও দল এসকল বিষয় গুরুত্ব না দিয়েই নির্বাচন শেষে তৈমূরকে দল থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

নির্বাচনের দুইদিন পর অর্থ্যাৎ ১৮ জানুয়ারি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুষ্পষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির গঠনতন্ত্র মোতাবেক আপনাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিস্কার করা হলো।

বিএনপি দলীয় সূত্র বলছে, প্রায় ১০ মাস পর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। গত ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের রাতে গুলশানের বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির আট সদস্য। রাত ৮টা থেকে এক ঘণ্টার কিছুটা বেশি সময় তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন। আর ওই সময়ে কারাগারে আটক দলের নেতাকর্মীদের বিষয়েও জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বিএনপির বহিস্কৃত নেতাদের ব্যাপারেও খোঁজ খবর নেন বেগম খালেদা জিয়া। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া বলেন, আমার তৈমূর কই? তাকে কেন বহিস্কার করা হলো? কার কাছে জিজ্ঞাসা করে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে? বিএনপিতে তার কোনো অবদান ছিলো না? কেন তাকে বহিস্কার করা হলো?

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাঠ ছিল অনেকটাই তৈমূরের পক্ষে। আওয়ামী লীগের দুইজন সেলিনা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমানের মধ্যকার ভোটের দ্বৈরথে তৈমূরের জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও দলের একটি গ্রুপ শামীম ওসমানের জয় ঠেকাতে তৈমূরকে বসিয়ে দেওয়া হয়। শেষতক আইভী জিতে যান। কিন্তু দেড় বছরেও তাকে বিএনপি ফিরিয়ে না নেওয়াতে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।

Islams Group
Islam's Group