News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

পরিবহনে আগুন ভাঙচুরে মামলা নাই


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৩, ০৬:২১ পিএম পরিবহনে আগুন ভাঙচুরে মামলা নাই

নারায়ণগঞ্জে হরতাল থেকে শুরু করে অবরোধ চলাকালে বেশ কিছু যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে ভাঙচুরের তালিকায় রয়েছে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মিনিট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি ও মোটরসাইকেল। ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া এসব পরিবহনের মালিকরা কেউই বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছেন না। বিএনপির অবরোধকে উপেক্ষা করে বাস নামানোর ঘোষণা দেয়া বাস মালিকরাও এইক্ষেত্রে নীরব।

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেলের তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ৩৫টি জায়গায় কাজ করছে পুলিশ। এছাড়া দিন রাত মিলিয়ে ৮৪টি মোবাইল টিম কাজ করছে। আমাদের অফিসাররা এটা তদারকি করছে। গোয়েন্দা ও ডিবিও কাজ করছে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত জেলার ৭টি থানায় নাশকতার অভিযোগে ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ২৮৮ জনকে।

নারায়ণগঞ্জে গত ২৮ অক্টোবর রাত থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩০টির মত গাড়ি কম বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুটি বাস, দুটি কাভার্ডভ্যান, একটি ট্রাক, একটি পিকআপ, একটি মিনিট্রাক ও একটি মোটরসাইকেল। বাকি যানবাহনগুলো ভাঙচুরের শিকার হয়েছেন অবরোধ সমর্থকদের দ্বারা। অগ্নিসংযোগে ক্ষতির শিকার হওয়া পরিবহন মালিকদের মধ্যে কেবল রূপগঞ্জে একটি মোটরসাইকেলের মালিক ছাত্রলীগ নেতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বাকি কোন যানবাহনের মালিকই এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেননি।

গত ২৯ অক্টোবরের হরতালে নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় উৎসব বাসের সিটে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল সমর্থকরা। সেই সাথে ভাঙচুর করা হয় বাসটিকে। একই সময়ে পাশে দাড়িয়ে থাকা বন্ধু পরিবহনের আরেকটি বাসও ভাঙ্গা হয়। এরপর গত ২ নভেম্বর শহরের কালীরবাজার এলাকায় উৎসব বাসে ভাঙচুর করে অবরোধ সমর্থকরা। শহরের মধ্য দিয়ে চলাচল করা তিনটি বাস ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এই ঘটনায় বাসের মালিকরা কোন মামলা দায়ের করেননি।

একই চিত্র দেখা গেছে সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ, ফতুল্লা, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জে। আড়াইহাজারে একাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়েছে অবরোধ জুড়ে। সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁইয়ের উপর দিয়ে মহাসড়কে চলাচল করা যানবাহন ভাঙচুর ও মিনিট্রাক-পিকআপে আগুন দেয়া হয়েছে। এসব ঘটনাতেও মালিকরা বাদী হননি।

রূপগঞ্জে দুটি কাভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক পুড়িয়ে দেয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সেই ঘটনায় মামলা না হলেও ২৮ অক্টোবর রাতে একটি মোটরসাইকেল পোড়ানোর ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। সবশেষ ৪ নভেম্বর দিবাগত রাতে সাইনবোর্ড এলাকায় অনাবিল পরিবহনের বাস পুড়ে গেলেও এই ঘটনায় কোন মামলা করেনি মালিক।

একের পর এক যানবাহন ক্ষতির শিকার হলেও মামলা করতে অনাগ্রহ দেখা গেছে বাস মালিকদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাস মালিক বলেন, ‘অবরোধে বাস বা গাড়ি নামাতে আগেই নিষেধ করেছে বিএনপি। এর মাঝে যানবাহন নামালে ভাঙচুরের কবলে পরতে পারে এটা দেশের রাজনীতিতে নিয়মিত চিত্র। বাস ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ আইনগত ভাবে অপরাধ। কিন্তু মামলায় বাদী হবার পর বিএনপি কোন কারণে ক্ষমতায় এলে সেই মালিকের আর বাস চালানো লাগবে না। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের শঙ্কায় কেউ এখন আর মামলায় বাদী হতে চাননা। ২০১৩/১৪ তে অনেকে বাদী হলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।’

তবে বাস ক্ষতিগ্রস্ত করার ঘটনায় মামলা হবে এমন দাবী করেন বন্ধন বাসের পরিচালক জুয়েল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সমিতিতে থাকা উৎসবের দুটি বাস ও একটি বন্ধু বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা থানা পুলিশকে অবগত করেছি। হয়তো দুই একদিনের মধ্যেই মামলা দায়ের করা হবে।’

Islams Group
Islam's Group