দিনে দিনে গতি হারাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসনে খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর একক ক্ষমতায় নিষ্ক্রিয় নেতাদের নিয়ে থানা উপজেলা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কারণে সরকার পতন আন্দোলনে চাঙ্গা হয়নি মহানগর বিএনপি। দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপি নেতা হয়েও কয়েক মিনিটের হরতাল অবরোধের মিছিলে দলের নেতা-কর্মী পাশাপাশি জনগণের কাছে হাসির পাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে মহানগরের নেতারা। সভা সমাবেশে মহানগর বিএনপির বাহাবা থাকলেও আন্দোলনে তারা হারিয়ে যাচ্ছে।
২৯ অক্টোবর হরতাল ও ৩১ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর টানা অবরোধে মহানগর বিএনপিকে চাঙ্গা করতে পারেনি নেতা-কর্মীরা। এমনকি আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্যদের কেউকে রাজপথে নামাতে পারেনি সাখাওয়াত ও টিপু। এদিকে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে অবরোধে মিছিল করলেও নেতা-কর্মী ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের মধ্যে বেশিভাগ দেখা গেছে বন্দর উপজেলা নেতা-কর্মীদের। এদিকে সদর থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের কয়েকজনকে দেখা গেলেও আন্দোলনে সাড়া পড়েনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি একাধিক নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দিক নির্দেশনা এককভাবে হাতে নিয়ে রেখেছেন সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তার মত তিনি হরতাল অবরোধে নেতা-কর্মীদের অবহত করে ঝটিকা মিছিল করে গা-বাঁচিয়ে যাচ্ছে। অবরোধের আগেদিন হঠাৎ কয়েকটি মশাল নিয়ে মিছিল করে হাস্যকর ঘটনার সৃষ্টি করেছেন। আলোচনায় আসার জন্য যা যা প্রয়োজন টিপু করে যাচ্ছে। এতে নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি কাক্সিক্ষত আন্দোলন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান নেতাকর্মীরা।
গতকাল রোববার দ্বিতীয় দফার অবরোধের প্রথম দিনে শহরের ডিআইটি থেকে টানবাজার এলাকায় মিছিল করে মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব টিপু নেতৃত্বে। এক মিনিটের ওই মিছিলটি সাধারণ জনগণ তো দূরের কথা মিছিলে থাকা কর্মীরা বুঝতে পারেনি, তারা আসলে কি করলো!
গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্যসচিব করে ৪১ সদস্যের মহানগর কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। টিপুকে সদস্য সচিব করায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদনের ৬ দিনের মাথায় ৪ যুগ্ম-আহ্বায়কসহ ১৫ নেতা পদত্যাগ করেন। তারা হলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউসার আশা, সদস্য অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম রিপন, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মনোয়ার হোসেন শোখন, ফারুক হোসেন, হাজী ফারুক হোসেন, হান্নান সরকার, আওলাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু।
আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ নেতার কেউই পদত্যাগপত্র জমা দেননি বলে জানিয়ে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, কমিটি নিয়ে কয়েকজন নেতার আপত্তি ছিল। মৌখিকভাবে কয়েকজন নেতার পদত্যাগ করার ঘোষণার বিষয়টি শুনেছি। তবে কেউই এখন পর্যন্ত লিখিত দেননি। লিখিত দিলে সে অনুযায়ী কেন্দ্রে পদত্যাগপত্র পাঠানো হবে। এরপর দীর্ঘদিন পর আতাউর রহমান মুকুল ও হাজী নুরউদ্দিন আহম্মেদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলেও বাকিদের এখনো অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :