নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবুর বিরুদ্ধে।
বুধবার (১ নভেম্বর) দুপুরে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় বাবুর সঙ্গে তর্কাতর্কির জেরে এক ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে সমালোচনায় ঝড় বইছে সোনারগাঁয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের মধ্যে আবারও বিভেদের বিষয়টি প্রকাশ পেল এমনটাই মনে করছেন সবাই। এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন কর্মসূচিকে ঘিরে এই দ্বদ্বের অনেকটাই অবসান ঘটেছিল। কিন্তু আজকের এই ঘটনা আবারও নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিলো।
জানা যায়, বিএনপির ডাকা সারাদেশে তিনদিন ব্যাপী অবরোধ বিরোধী মিছিল করতে দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাঁচপুরে জড়ো হোন। এর আগে সকাল থেকেই স্পটে কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন, তার ছোট ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বাবুল ওমর বাবুসহ তার অনুসারীরা অবস্থান নেন। পরবর্তীতে আবু জাফর বিরুসহ সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বড় একটি মিছিল কাঁচপুরে হাজির হোন। এসময় বিরুকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বাবুল ওমর বাবু। এসময় তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ঘটে। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবুল ওমর বাবু তর্কাতর্কির মধ্যে বিরুকে থাপ্পর দিয়ে বসেন। এসময় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা দুইপক্ষকে বুঝিয়ে শান্ত করেন। পরবর্তীতে বাবুর বড় ভাই কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন বিরুকে ওইখান থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এসময় মোশাররফ হোসেন বিরুকে বলেন, বাবুর মেয়ে মারা যাওয়ার পর থেকেই ও পাগলের মতো হয়ে আছে। তাই ও এমন কাজ করে বসে আছে।
লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তর্কাতর্কির বিষয়টি স্বীকার করেছেন অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সময়ের নারায়ণগঞ্জকে তিনি বলেন, মাসখানেক আগে বাবুর মেয়ে যেদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় ওইদিন রাত ৩টার দিকে বাবু তাকে কল দিয়েছিল তার মেয়ের চিকিৎসার পরামর্শের জন্য। তিনি একাধিকবার আমাকে ফোন দিলেও সজাগ না থাকায় আমি ফোনটি রিসিভ করতে পারিনি। পরবর্তীতে তার মেয়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা গেলে আমার উপর তার একরকম ক্ষোভ ছিল। পাশাপাশি সে এইবার সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কয়েকমাস আগে সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও এখনো এর কমিটি ঘোষণা হয়নি। বাবুর ধারণা আমার কারণে এই কমিটি গঠন হয়নি। আমি হয়তো বাধা প্রদান করে কমিটি গঠন আটকে দিয়েছি। এই দুই বিষয় নিয়ে সে কয়েকদিন ধরে আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। কিন্তু এতোদিন মুখোমুখি না হওয়ায় তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারছিলেন না। আজ আমাকে পেয়ে এই ক্ষোভ থেকেই আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেন। তবে এ ঘটনায় আমি কোনো দু:খ পাইনি। কারণ আমরা দুজনই একই দলের কর্মী। একই দলের কর্মীর সঙ্গে কোনো রাগ রাখা যায়নি। ভুল বুঝাবুঝি থেকে তিনি হয়তো আমার সঙ্গে এই আচরণ করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :