নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আবারো দল পরিবর্তন করছেন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি শামীম ওসমান যাদের মধ্যে ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে ভোট যুদ্ধে হয়েছিল। ওই নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে কৃষক লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েই গিয়াসউদ্দিন এমপি হন আর শামীম ওসমান পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। শামীম ওসমানের দাবী, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন দল ছাড়তে পারেন।
গিয়াসউদ্দিন এখন জেলা বিএনপির সভাপতি। গত বছরের নভেম্বরে তাকে আহবায়বক করা হয়। পরে এ বছরের জুনে সম্মেলনের মাধ্যমে গিয়াসউদ্দিন জেলা বিএনপির সভাপতি হন। এর আগে ২০০৭ সালে ওয়ান এলেভেনের আগ পর্যন্ত গিয়াসউদ্দিন ছিলেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি। এছাড়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি।
সূত্রমতে, ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেয় গিয়াসউদ্দিন। পরে ১৯৭২/৭৩ সালে গিয়াসউদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়। ওই সময় নজরুল ইসলাম ভূইয়া ছিল সভাপতি। ৭৫ পরবর্তীতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পর এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ৮০’র দশকে আওয়ামী লীগ থেকে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন গিয়াসউদ্দিন। পরে সদর উপজেলা (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) নির্বাচনে দলের প্রভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত গিয়াসউদ্দিন। এরশাদের পতনের পর অনেকটা বেকায়দায় পড়ে যান গিয়াস উদ্দিন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের মাঝামাঝি গিয়াস উদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জের হিরাঝিল এলাকায় গড়ে তোলেন জিআর টেক্সটাইল মিল। এরশাদের পতনের পর কিছুদিন রাজনীতিতে নিস্ক্রীয় থাকার পর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে ১৯৯৪/৯৫ সনে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। এবং তদবির করে কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ দখল করে নেন তিনি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমানের বিপক্ষে অবস্থান নেয় গিয়াস উদ্দিন। পরে শামীম ওসমান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় গিয়াস উদ্দিনের। এতে গিয়াস উদ্দিন শেল্টার নেয় কৃষক লীগের সভাপতি ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী রাসেদ মোশারফের। ২০০১ সালের ১৪ আগস্ট গিয়াস উদ্দিন কৃষক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেয়। পরে এফবিসিআইসির নেতা শিল্পপতি মোহাম্মদ আলীর সুবাধে প্রতীক বরাদ্দের আগের দিন নাটকীয়ভাবে ৬ সেপ্টম্বর গিয়াস উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যান। এবং ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে পরাজিত করে গিয়াস উদ্দিন এমপি নির্বাচিত হয়ে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে রাতারাতি আলোচনায় ওঠে আসেন।
১ নভেম্বর এক সভায় শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির এক প্রেসিডেন্ট আছে। পল্টিবাজ এমপি ছিল। আমাদের ১৭ জন লোককে হত্যা করেছিল। তৈমূর সাহেবের ভাই সাব্বিরকেও মেরেছিল। ওদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতিন চৌধুরীর গাড়িতে হামলা করেছিল। একেক সময়ে একে দল করে। খবর নিয়ে একটু দেখবেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সে অন্য কোন দলে যাচ্ছে কি না? তৃণমূলে তো যেতে পারবে না তৈমূর আলম খন্দকার লাথি দিয়ে বের করে দেবে।
আপনার মতামত লিখুন :