বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের দলত্যাগ নিয়ে বিবৃতি এসেছে ছোট ভাই মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের কাছ থেকে। তিনি বলেছেন, তৈমূরের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনি ও তাঁর পরিবার একমত না। খোরশেদ নিজেও বিএনপি নেতা। তিন ডজন মামলার আসামী তিনি। ছিলেন যুবদলের মহানগরের সাবেক আহবায়ক ও সভাপতি। টানা চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর খোরশেদ এখনো বিএনপির সকল কর্মকান্ডে সক্রিয়। সম্প্রতি তৈমূরের ভাগ্নে রাশিদুর রহমান রশো মহানগর কৃষক দলের সেক্রেটারী হয়েছেন। তিনিও কয়েক ডজন মামলার আসামী। এছাড়া তার আরেক ভাগ্নে নাজমুল কবির নাহিদ সহ অনুগামী কয়েকজনেরও ঠাঁই মিলেছে কমিটিতে। ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারী তৈমূর বহিস্কারের পর যখন পরিবারে এক অন্ধকার তখন কৃষক দলের কমিটিতে আশার আলো দেখা যায়। এ সময়ে এসে তৈমূরের দলত্যাগ পুরো পরিবারকে বিমর্ষ করে তুললেও তাঁরা সকলেই বলছেন, এটা তৈমূর আলম খন্দকারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
এ ব্যাপারে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বিবৃতিতে বলেন, তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের পরিবারের একমাত্র ভরসাস্থল ও নীতি নির্ধারক।তবে তার বর্তমান রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত নই। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি একটি মহাসমুদ্র। বলতে চাই আমৃত্যু আমি বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হয়ে বিএনপিতেই থাকতে চাই। হয়তো আর কোনদিন দলের কোন পদ পদবী পাবো না। তবুও দলের সাধারণ সদস্য হিসাবে, একজন কর্মী হিসাবে কাজ করে যাব। বিএনপি যদি আমাকে বহিষ্কারও করে তবুও আমি ধানের শীষের একজন ভোটার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন অনুসারী ও শুভাকাঙ্খীহিসাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতি আস্থাশীল ও দলের সাথে থাকবো ইনশাআল্লাহ।আমাকে ভালবাসেন এমন নেতাকর্মীদের ও নারায়ণগঞ্জবাসীকে বিভ্রান্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান রইলো। তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের পরিবারের একমাত্র ভরসাস্থল ও নীতি নির্ধারক।তবে তার বর্তমান রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত নই।
প্রসঙ্গত, মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের চার বারের নির্বাচত কাউন্সিলর। ২০০৩ সালে শুরু পৌরসভার নির্বাচন দিয়ে। এর পর আর তাকে পেছনে ফিরতে হয়নি। পরের ২০১১, ২০১৬ ও সবশেষ ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারী নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে খোরশেদ এখন সারাদেশে একটি আলোচিত নামে পরিণত। করোনার ভয়াবহতা বাড়তে শুরু করলে দাফন, সৎকার থেকে শুরু করে সবকিছুতেই এগিয়ে ছিলেন খোরশেদ। তখন থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে কিছুটা দূরে থাকেন। প্রচারণা করেন ব্যক্তি খোরশেদের। আর অল্পদিনেই বনে যান ‘করোনা হিরো’ আর ‘করোনা বীর’ সহ নানা উপাধিতে। খোরশেদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪৯টি। বিগত দিনে হরতাল অবরোধ চলাকালে সামনের সারিতে থাকা এ যুবদল নেতাকে এখন পর্যন্ত কারাবন্দী হতে হয়েছে ১০ বারের মত। এছাড়া জেল গেট থেকেও গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকবার। মহানগর যুবদলের সেক্রেটারী থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন কালে খোদ প্রতিপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিরাও তাঁর সক্রিয়তাকে স্বীকার করেছেন।
তৈমূরের ভাগ্ন রাশিদুর রহমান রশো এক সময়ে ছাত্রদলের ডাকসাইটে নেতা ছিলেন। ৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার যুগ্ম আহবায়ক ও পরে সভাপতি হন। ওই সময়ে নারায়ণগঞ্জ থানা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, পরে তিনি মহানগরের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ইতোমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা চলমান রয়েছে। কারাভোগ করেছেন ৯ বার। ২০১৪ সালের গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন রশু। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানার মামলায় টানা চারবার জেলগেট থেকে গ্রেফতার এবং অনেকবার রিমান্ডে গিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কৃষক দলের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক।
আপনার মতামত লিখুন :