News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০

‘খসরুর ছেলে’ সুমন আড়াইহাজারে জনপ্রিয়


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩, ১০:৫১ পিএম ‘খসরুর ছেলে’ সুমন আড়াইহাজারে জনপ্রিয়

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম সাবেক যুবদল নেতা ও আড়াইহাজার বিএনপির সভাপতি এম বদরুজ্জামান খান খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমন। তার বাবার মতো আড়াইহাজারের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। পাশাপাশি বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এক প্রোগ্রামে মাহমুদুর রহমান সুমনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি নিজ এলাকার নেতাকর্মী, ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আসছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চালাচ্ছেন বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। বর্তমানে এই আসনে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু। বিএনপি থেকে মাহমুদুর রহমান সুমনকে মনোনয়ন দিলে টানা তিনবারের এমপি বাবু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন এমনটাই মনে করছেন এখানকার ভোটাররা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড়াইহাজারের প্রতিটি মাটিকণার সাথে তার প্রয়াত বাবা ও তার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। শুধু বিএনপি না বরং এলাকার প্রত্যেকটি মানুষের সাথে তাদের আত্মিক সম্পর্ক।

জানা যায়, এই আসনটি আড়াইহাজার ও গোপালদী নামের দুটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৩ জন। এ আসনে ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আতাউর রহমান খান আঙ্গুর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমদাদুল হক ভূঁইয়া ৫৮ হাজার ৯৪৭ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ফের এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ এবং সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নজরুল ইসলাম বাবু। বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯১ সালে সুমনের প্রয়াত বাবা খসরু উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে তাকে বিএনপির নির্বাচনের কথা বলেন দলের হাইকমান্ড। কিন্তু খসরু তখন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েনি। ছোট ভাই আতাউর রহমান আঙ্গুরকে বিএনপির মনোনয়ন এনে দেন। যদিও তিনি তখন বিএনপির কোন পদে ছিলেন না। এ নিয়েও দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় খসরুর। খালেদা জিয়াকে আশ্বস্ত করেন খসরু যে তিনি আঙ্গুরের জয়ের দায়িত্ব নিবেন। শুরু হয় খসরুর চ্যালেঞ্জের যাত্রা। ঘরে ঘরে গিয়ে খসরু বলতেন, ‘আপনারা আমাকে যেমন ভালোবাসেন তেমনি ভালোবাসবেন আঙ্গুরকে। তাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’

খসরুর কথা রাখেন আড়াইহাজারবাসী। ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে আঙ্গুর সংসদ সদস্য নিবাির্চত হন। কিন্তু ওয়ান এলেভেনের পরে খসরুর সম্মান নষ্ট করেন আঙ্গুর। ভিড় করেন সংস্কারপন্থীদের দলে। ২০০৮ সালের নিবার্চনে দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। তখন দলের মনোনয়ন পান খসরু। দলীয় বিরোধের কারণে ৮৭ হাজার ভোট পেয়েও আসনটি হাতছাড়া হয় বিএনপির। আসনটি চলে যায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর হাতে। বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকেই তিনি এ দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে জাগো দল থেকে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকসহ একাধিক পদে। দেশের প্রথম গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করেন খসরু। সেটাও ৮০ এর দশকে। পরে আড়াইহাজারে স্পিনিং মিল। তবে ওই সময়ে উপার্জনের ক্ষেত্রে খসরু ছিলেন অনেক উপরে। প্রচুর বিদেশী অর্ডার রপ্তানি করে অল্প দিনেই প্রচুর সম্পদের মালিক বনে গেলেও সে টাকা ঘরে রাখতে পারেনি। ‘আড়াইহাজারের অন্তত ৯০ ভাগের বেশি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদে তার বাবার অনুদান কিংবা সহযোগিতা রয়েছে। তিনি অকাতরে বিলিয়ে গেছেন। শুধু রাজনীতি না বরং রাজনীতির ঊর্ধ্বে এসে তিনি মানুষের পাশে ছিলেন। তার বাবার মতো তিনিও সেটা অনুসরণ করে আসছেন। বাবার মতই আদর্শবান সৎ মানুষ হিসেবে বিএনপির রাজনীতি করে মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছেন তিনি। এলাকার মানুষের বিপদে আপদে সম্পৃক্ত থাকলেই কেবল প্রকৃত জনপ্রতিনিধি হওয়া সম্ভব। এখনো তিনি ডাক দিলে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। এটা তার বাবার আদর্শের কারণে। তার বাবার রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য ইতিহাসের কারণে।

এদিকে বিএনপির অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে সভা-সমাবেশ করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে আড়াইহাজারে একমাত্র মাহমুদুর রহমান সুমন জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। এর ফলে সুমনের পরিবর্তে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির ভরাডুবি হবে তা সহজেই অনুমেয়।

স্থানীয়রা জানান, এ আসনে বিএনপি থেকে মাহমুদুর রহমান সুমনকে মনোনয়ন দিলে জমজমাট লড়াই হবে। তবে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুকে হারানো এতো সহজ হবে না বিএনপির কাছে। আড়াইহাজার বিএনপি যদি সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দলের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেন তাহলে এই আসনটি সুমনের মাধ্যমে আবারও পুনরুদ্ধার করতে পারবে।

Islams Group
Islam's Group