গত রোববার ও সোমবার গভীর রাতে নাসিকের ১৩ নং ওয়ার্ডের বোয়ালিয়া খাল এলাকায় মহড়া দিতে দেখা গেছে সাবেক ছাত্রদল নেতা ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের অনুসারীদের। এ সময় তাদের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে কি কারণে জাকির খানের অনুসারী ও বাহিনীর লোকজন মহড়া দিল তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয়রা মনে করছেন, সাধারণ মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার ও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে এই মহড়া দেওয়া হয়েছে। এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, গার্মেন্ট’র থান কাপড়ের ব্যবসা নিয়ে বোয়ালিয়া খাল (গলাচিপা) এলাকার এক ব্যবসায়ীকে ভয় দেখাতে এ মহড়া দেওয়া হয়েছে।
গত ৪ জুন রোববার রাত ১১ টায় ও ৫ জুন সোমবার রাত ১০ টায় দুই বার ১০ থেকে ১৫ টি মোটর সাইকেল নিয়ে জাকির খানের ৫০ জন অনুসারী স্থানীয় এক থান কাপড় ব্যবসায়ীর গোডাউনের সামনে শোডাউন করেন।যার নেতৃত্বে ছিল জাকির খানের ভাগিনা সনেট আহম্মেদ ও বান্টি। এছাড়া জাকির খানের চাচাতো ভাই লিংরাজ-সহ শহর ছাত্রদল ও মৎসজীবী দলের একাধিক নেতাকেও এই মহড়ায় উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৎসজীবী দল নেতা ও থানকাপড় ব্যবসায়ী রয়েল অপর এক ব্যবসায়ীর কাছে বাকিতে থান কাপড় বিক্রি করেছিল। এরপর সেই ব্যবসায়ী উধাও হয়ে যায়। তবে এর একমাস পরে বোয়ালিয়া খাল এলাকার এক ব্যবসায়ীর গোডাউনে সেই মাল পাওয়া যায়। তাই সনেট, বান্টি, লিংরাজসহ জাকির খানের অসংখ্য অনুসারী সেই ব্যবসায়ী গোডাউনের সামনে গিয়ে মহড়া দেন।
বোয়ালীয়া খাল এলাকার হোসিয়ারী ব্যবসায়ী আলমাস মিয়া বলেন, জাকির খানের পোলাপাইন ধান্দা করতে আইসে। ওরা বলে, কে নাকি ওদের মাল আটকায় রাখছে। এগুলো কি বিশ^াস করার মতো কথা। বলেন ওরা দুই নম্বর গেটে মানুষের মাল আটকায় রাখে। আর এখন কয় ওদের মাল আটকায় রাখছে। মূল কথা হইসে ভয় দেখাইয়া ধান্দা করতে চাইছিল ওরা। কিন্তু লাভ হয় নাই।
বোয়ালিয়া খাল এলাকার রূপার বাড়ির বাসীন্দা আফজাল হোসেন বলেন, সোমবার রাতে কারেন্ট আছিল না। তাই আমরা আমাদের বাড়ি সামনে আঈভী আপায় যেই ছোট্ট পার্ক কইরা দিসে, সেখানে বসে আছিলাম। এরমধ্যে জাকির খানের ভাগিনা সনেট আর দুই নম্বর গেটের বান্টি হোন্ডার আর অনেক পোলাপান নিয়া আমাদের এখানে আসে। ওদের দেইখা আমরা ভয় পেয়ে মহিলা ও বাচ্চাদের নিয়া বাসায় চলে যাই। সেদিন রাতে ঘণ্টাখানেক ওরা বোয়ালিয়া খালের রাস্তার এক মাথা থেকা আরেক মাথায় শোডাউন করছে। ওদের লগে রড আর লাঠিসোটাও আছিল। আমরা ভয়ে আছি যে জাকিরে জেলে থাকতেই ওর পোলাপাইন হাঙ্গামা শুরু করছে। যেদিন বাইর হইব সেদিন দেওভোগের মানুষ আর শান্তিতে থাকতে পারবোনা।’
বোয়ালিয়া খাল এলাকার মাইকেল মিয়ার বাড়ির এক ভাড়াটিয়া বলেন, রোববার রাতে আমাদের বাড়ির নিচে নাসিকের যেই ছোট্ট পার্ক আছে। সেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে অনেক ছেলেপুলে এসেছিল। আমরা জানিনা ওরা কারা। কিন্তু ওদের আচরণ দেখে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত ওরা তেমন কিছুই করেনি। শুনেছি স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সাথে ওদের ঝামেলা আছে। তাই ওরা তাকে ভয় দেখাতে এখানে এসেছিল।
জাকির খান প্রায় দেড় যুগ পালিয়ে থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে অস্ত্র সহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়। সে এখন কারাবন্দী। এরই মধ্যে এমপি শামীম ওসমান সম্প্রতি এক বক্তব্যে জাকির খানের প্রশংসা করেছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :