নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বিরুদ্ধে এবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পদ পদবী দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যারা বিগত দিনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন আর তাদেরকে দিয়েই ওয়ার্ড কমিটিগুলো ঘোষণা করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২২ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ঠিক এমনটাই ঘটেছে। যেখানে বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে থাকা নেতারা পদ পেয়ে গেছেন।
জানা যায়, সম্পতি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর স্বাক্ষরিত হাতের লেখা কাগজে ২২ নং ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যেখানে সভাপতি পদে রয়েছেন শিবু চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মো. রাসেল বেপরী।
সেই সাথে সিনিয়র সহ সভাপতি পদে মো. সানোয়ার হোসেন, সহ সভাপতি পদে মো. সেলিম ও নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রিপন আহম্মেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন ফয়সাল আহমেদ।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, মহানগর বিএনপির ২২ নং ওয়ার্ডে পদ পাওয়া সিনিয়র সহ সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন আহম্মেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময়ে তারা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। নৌকা প্রতিকের পক্ষে বিভিন্ন মিছিল মিটিং করেছেন। আর এবার তাদেরকেই বিএনপির পদে বসাচ্ছেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সাখাওয়াত হোসেন খান আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে সুযোগ দিতে চান। তার তাদেরকে বিএনপির বিভিন্ন পদে বসাচ্ছেন। যাতে করে নিজের ইচ্ছেমতো নেতাকর্মীদের ব্যবহার করা যায়।
দলীয় সূত্র বলছে, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু নানা কর্মকান্ডে বিতর্কিত হয়ে আসছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের পদায়ন, সদস্য সচিব ছাড়া কমিটি, কমিটি গঠনে টাকা বিনিময়ের অভিযোগ সহ নানা কাজে বিতর্কিত হয়ে আসছেন। সেই সাথে কর্মসূচিতেও তারা নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারছেন না।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ও সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা।
সেই সাথে সদস্য পদে থাকা পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- আওলাদ হোসেন, হান্নান সরকার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহীদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, ফারুক হোসেন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, মো. ফারুক হোসেন।
কিন্তু তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য দুই দফায় আল্টিমেটাম দেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ খান টিপু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই আল্টিমেটাম কোনো কাজেই আসেনি। আল্টিমেটামের বিপরীতে তাদের বলয় দিন দিন বড় হতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে পাল্টা কমিটি ঘোষণার পর থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছেন।
আপনার মতামত লিখুন :