News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮ আশ্বিন ১৪৩০

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন ঘিরে পৃষ্ঠপোষক কমিটি


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন ঘিরে পৃষ্ঠপোষক কমিটি

দীর্ঘদিন পর আগামী ১৭ জুন সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে দলটির নেতৃবৃন্দ। এ নিয়ে জেলা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চলছে দফায় দফায় বৈঠক। এদিকে রাজধানী লাগোয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নিচ্ছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বিএনপির। তাই কাউন্সিল কীভাবে সফলভাবে পালন করা যায় সেজন্য জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছে দলটির নেতৃবৃন্দ। এর ফলে জেলা বিএনপির সম্মেলনকে নিয়ে বেশ উজ্জীবিত দলটির তৃণমূলরা। তাদের মতে, জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে যোগ্য ব্যক্তিরাই স্থান পাবেন।

এদিকে এবার জেলা বিএনপির কাউন্সিল অন্যান্য সময়ের তুলনায় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে করা হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি জেলা বিএনপির এই কাউন্সিলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এদিন তারেক রহমান জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। অর্থাৎ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলা বিএনপির এই কাউন্সিল নেতাকর্মীদের আরো সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী করবে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সম্মেলন নিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সঙ্গে জেলা বিএনপির গত কয়েকদিনের বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ৪ জুন সকাল ১০ টায় ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে আহবাযক কমিটির ৯ জন সদস্যের মধ্যে ৭ জনই উপস্থিত ছিলেন। বাকী দুজন শহীদুল ইসলাম টিটু ও লুৎফর রহমান খোকা আদালতে হাজিরা থাকার কারণে ওই বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেনি। ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নারায়ণগঞ্জের ৫ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনটি সফলভাবে পালন করার জন্য সকল ঐক্যমতের ভিত্তিতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, নজরুল ইসলাম আজাদ, মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভূঁইয়া, আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি পৃষ্ঠপোষক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির প্রত্যেকেই কাউন্সিলকে সফলভাবে করার জন্য যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে। পাশাপাশি ওই বৈঠকে সম্মেলনের স্থানও নির্ধারণ করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে করা আগের  বৈঠকে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ সম্মেলনের জন্য তিনটি স্থান নির্ধারণ করেন। পরবর্তীতে এই সম্মেলন সিদ্ধিরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এছাড়া বৈঠকে জেলা বিএনপির কাউন্সিল করার আগে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির কাউন্সিল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতৃবৃন্দ সে লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।

জানা যায়, ফতুল্লা থানা বিএনপির কাউন্সিলও দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় বড় পরিসরে এটি করা হবে এবং এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটুর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, জেলা বিএনপির সর্বশেষ আহবায়ক কমিটি হওয়ার পূর্বে গঠন হওয়া জেলা বিএনপির ৫ টি ইউনিট কমিটি বাতিল করার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হবে না বলে জানা গেছে।

ফতুল্লা থানা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেই জেলা বিএনপির ১০টি ইউনিট কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে ঘিরে তাদের ১০ টি ইউনিটে কমিটির ১০১ জন করে কাউন্সিলর রয়েছেন। সে হিসেবে সারা জেলাজুড়ে ১ হাজার ১০ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এদের থেকে যেকেউ জেলা বিএনপির কমিটিতে প্রার্থী হতে পারবে। সেদিনের সম্মেলনে ভোটাভুটির মাধ্যমে ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। জেলা বিএনপির ইউনিটগুলো হলো রূপগঞ্জ উপজেলা, সোনারগাঁ উপজেলা, আড়াইহাজার উপজেলা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, ফতুল্লা থানা, সোনারগাঁ পৌরসভা, কাঞ্চন পৌরসভা, তারাব পৌরসভা, গোপালদী পৌরসভা ও আড়াইহাজার পৌরসভা।

এদিকে জেলা বিএনপির সর্বশেষ আহবায়ক কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই দুটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। একটি গ্রুপ ছিল গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে আরেকটি গ্রুপ ছিল মামুন মাহমুদের পক্ষে। দুটি গ্রুপের মধ্যে চলমান এ দ্বন্দ্ব জেলা বিএনপির প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে বহি:প্রকাশ ঘটে। এ নিয়ে অনেক সমালোচনাও হয় জেলা বিএনপিকে নিয়ে। তবে সব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে জেলা বিএনপির কাউন্সিলকে সফল করার প্রস্তুতিমূলক সর্বশেষ বৈঠকে দুটি গ্রুপই উপস্থিত হয়। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জেলা বিএনপির প্রত্যেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাউন্সিলকে সফল করার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।

জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই হঠাৎ জেলা বিএনপির কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ চেয়েছিল দলকে আরও সুসংগঠিত করার জন্য ঈদুল আজহার পর কাউন্সিল করতে। এছাড়া বর্তমানে অনেক নেতাকর্মী জেলহাজতে রয়েছেন, অনেকেই আবার আদালতে হাজিরা নিয়ে ব্যস্ত। তাই সম্মেলনে সকল কাউন্সিলর একসঙ্গে করতে পারবে কিনা এ নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জেলা বিএনপি। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা কাউন্সিলকে সফলভাবে পালন করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের দিনই জেলা বিএনপির ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। এদিকে জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। কে হবে জেলা বিএনপির পরবর্তী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতি তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে গিয়াস উদ্দিনের নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তার সঙ্গে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হিসেবে থাকবে না এমনটাই শোনা গেছে। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে গোলাম ফারুক খোকন ও মাসুকুল ইসলাম রাজিবের নাম এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে শহীদুল ইসলাম টিটু ও লুৎফর রহমান খোকার নাম উচ্চরিত হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে কাউন্সিলকে ঘিরে জমজমাট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিএনপির সব নেতাকর্মীর নজর এখন ১৭ তারিখের কাউন্সিলের দিকে।

Islams Group
Islam's Group