নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতাদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও তারা নিজেদের বিদ্রোহী হিসেবে মানতে রাজী নয়। তাদের মতে, তারা মূলধারাতেই রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সন্ধ্যার পর শহরের সিনেমন রেস্তেরায় এই সভা সম্পন্ন করেন। সভায় বিদ্রোহীদের তালিকায় থাকা সকল নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। প্রায় দুই ঘণ্টা সময় ধরে তাদের মাঝে এই সভা চলে।
সভার উপস্থিত নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সভায় সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট নানা বিষয়েই আলোচনা হয়। আবারও তারা ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন।
একই সাথে কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হচ্ছে, মহানগর বিএনপির ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জে যখন কোনো কেন্দ্রীয় নেতা আসবেন তখন তারা শৃঙ্খলার স্বার্থে কোনো কর্মসূচি পালন করবেন না। এছাড়া সকল কর্মসূচিতেই তারা আলাদাভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বিদ্রোহীদের বলয় ভাঙার গুঞ্জন উঠে। কোনো কোনো নেতা তাদের বলয় ছেড়ে আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর বলয়ে ভিড়েন। যা নিয়ে মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে অনেক আলাপ আলোচনা হয়।
এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পদে থাকা আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল ও সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা।
সেই সাথে সদস্য পদে থাকা পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- আওলাদ হোসেন, হান্নান সরকার অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, মনোয়ার হোসেন শোখন, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, শহীদুল ইসলাম রিপন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা, আমিনুর ইসলাম মিঠু, ফারুক হোসেন ও মো. ফারুক হোসেন।
মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর খান সেন্টু বলেন, মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা আগে পূর্ববর্তী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সাথে আলোচনা করা হয়নি। আমরা এই কমিটির গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে তুলে ধরেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দলের আদর্শ উদ্দেশ্য ও গঠনতন্ত্র মেনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জন্ম লগ্ন থেকে করে আসছি। বর্তমানের এই স্বেরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। আগামী দিনে জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথ থেকে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করবো।
দলীয় সূত্র বলছে, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব হিসেবে অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আর এই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছেন। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
কিন্তু তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য দুই দফায় আল্টিমেটাম দেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ খান টিপু। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই আল্টিমেটাম কোনো কাজেই আসেনি। আল্টিমেটামের বিপরীতে তাদের বলয় দিন দিন বড় হতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে পাল্টা কমিটি ঘোষণার পর থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছেন।
আপনার মতামত লিখুন :