News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

বিভেদ ভুলে হাতে হাত


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩, ১০:৫১ পিএম বিভেদ ভুলে হাতে হাত

‘হাতে হাত চেপে, উদ্যত সারি সারি। কিছু না হলেও আবার আমরা, রক্ত দিতে তো পারি?’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা কবিতার পঙ্তি যেন স্মরণ করিয়ে দিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কিছুদিন পূর্বেই যেই দুই নেতা একে অপরকে বিষোদ্গার করেছেন কিংবা ইঙ্গিতে কটাক্ষ করেছেন, সেই দুই নেতাই দলীয় প্রধানের প্রশ্নে একত্রিত হয়েছেন। হাতে হাত রেখে স্লোগান দিয়েছেন নেত্রীকে হত্যার হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে।

রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এমনই দৃশ্যপট দেখলেন দলটির নেতাকর্মীরা। গত ৪ বছর ধরে খোকন সাহা ও আনোয়ার হোসেন যেখানে অধিকাংশ কর্মসূচি পৃথকভাবে করতেন, সেখানে রোববার একত্রিত হয়ে মিছিল করেছেন নারায়ণগঞ্জ শহরে। মাঝে কিছুদিন ওয়ার্ড সম্মেলন ও ঘরোয়া সভায় একসাথে কর্মসূচি পালন করলেও রাজপথের কর্মসূচিতে এক দেখা যায়নি তাদের। এমন অবস্থা থেকে সোজা হাতে হাত রেখে মিছিলে সরব দেখতে পেয়ে উজ্জীবিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহাকে নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে উত্তেজনা বাড়াতেন দলীয় রাজনীতিতে। জেলা পরিষদের পদ কিংবা প্রভাবশালী এমপির আনুগত্য প্রশ্নে বিভাজন লেগেই থাকতো। মাস খানেক পূর্বেও যেই দুই নেতা আলাদা কর্মসূচি করেছেন এবং একজন অপরজনকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন। যদিও সমালোচনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরাসরি নাম উল্লেখ না করেই করা হতো। আর সেই কারণেই বোধহয় দুই সিনিয়র নেতার এমন মিলন আবারও চোখে পড়েছে সবার।

সূত্র বলছে, মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পেতে কেন্দ্র থেকেও বেশ চাপ পেয়েছেন আনোয়ার ও খোকন সাহা। ঐক্যবদ্ধ না থাকা, বিষোদ্গার করা এবং বিভাজন তৈরির অভিযোগ উভয়ের দিকেই। চাপের মুখে কিছুদিন ধরেই একসাথে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম সামলাচ্ছেন। এরই মধ্যে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির ডাক আসলে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পান আনোয়ার ও খোকন সাহা। রাজপথে নেমে হাতে হাত রেখে প্রমাণ দিলেন, দলীয় সভানেত্রীর প্রশ্নে তাঁরা এক এবং অভিন্ন। মহানগর আওয়ামী লীগে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহার পৃথক কর্মী বলয় রয়েছে। উভয় বলয়ের নেতাকর্মীরা দুই নেতার এমন বন্ধন দেখে খুশি হয়েছেন বেশ।

বিকেলে সমাবেশ ও মিছিলে একসাথে কর্মসূচি পালন করেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। উভয় বলয়ের নেতারা একত্রিত হয়ে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পান। আনোয়ার ও খোকনকে একসাথে দেখা গেলেও কোন বলয়কেই বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে দেখা যায়নি। আগের তুলনায় অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত এবং সুশৃঙ্খল ছিলেন নেতাকর্মীরা। দুই নেতার বক্তব্যেও ছিল একই সুর। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অপমানজনক বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন কঠোর সুরে।

সমাবেশে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাজপথেই আমরা আজ জানিয়ে দিবো যে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ পিছিয়ে নেই। যেই গোষ্ঠী আমাদের নেত্রীকে হুমকি দেয় আমরা সেই ব্যক্তিদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবো। নেত্রীকে হুমকি দিলে আমরা বসে থাকবো না। আগামী দিনে বিএনপির কোন ব্যক্তি যদি আওয়ামী লীগের কাউকে নিয়ে কটূক্তি করে, তাহলে তার জিভ টেনে ছিড়ে ফেলবো।’

একই সমাবেশে  খোকন সাহা বলেন, ‘বিএনপি এখন স্বাধীনতা বিরোধী জামাতকে এই দেশের রাজনীতিতে স্টাবলিশ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ওদের রাজনীতি কোন সুস্থ রাজনীতির কাতারে পড়ে না। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, এখন আর প্রতিবাদ করবো না। প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। সুতরাং যে যেই অবস্থানেই থাকেন, এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবেন।’

দলের কর্মীরা বলছেন, বিগত পাঁচ বছর আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা যদি এক হয়ে কাজ করতেন তাহলে উপকৃত হতো মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রতিটি ইউনিটে কমিটি গঠন হতো। এই একত্রিত হওয়া যেন স্বার্থের না হয় কিংবা চাপের মুখে না হয়। দলীয় প্রধানের প্রশ্নে একত্রিত এই আচরণ সবসময় থাকলে মহানগর আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে। কর্মীরা পাবেন সঠিক নেতৃত্ব।

Islams Group
Islam's Group