দুই মেরুর প্রভাবশালীদের দ্বন্দ্বে রেশে নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হারিয়ে যাচ্ছে। ওই প্রভাবশালীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কবে নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে সৃষ্টি হবে কেউ বলতে পারছে না। এদিকে ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ দল থাকা অবস্থায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। ক্লিন ইমেজে রাজনীতি করে এখনো কোন দিন পদ না পাওয়া তারা রীতিময় প্রভাবশালীদের দোষারূপ করে যাচ্ছে। তাদের সমর্থন ছাড়া যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কোন পদ তো দূরের কথা সদস্য পাওয়া না বলে মন্তব্য করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত সোমবার নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক বিক্ষোভ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু দেখা যায়নি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের।
২০০৩ সাল থেকে এখনো বহাল রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও শহর যুবলীগ। প্রায় ২০ বছর হলেও তাদের মধ্যে অনেকে এখন আওয়ামী লীগের বড় বড় পদসহ সদস্য হয়ে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর কাদির জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল টানা দ্বিতীয়বার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হলেও সাধারণ সম্পাদক আলী আহাম্মদ রেজা উজ্জল এখানো এই পদে রয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নিপু-আরাফাত (২০০৩-২০১১) ও সানি-সুজনসহ (২০১১-২০১৮) সাবেক নেতারা এখনো আওয়ামী লীগের বড় কোন পদে যেতে পারেনি। এর মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএম আরাফাত ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আরেকজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান রয়েল মহানগর শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু এখনো মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য রয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জেলা যুবলীগের সভাপতি প্রত্যাশী হলেও এখনো পদ পাননি।
নিপু-আরাফাত জেলা ছাত্রলীগের কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম হাসান দিনার জানান, ছাত্রজীবনে ২০০৩ সালে জিএম আরাফাতের হাত ধরে রাজনীতে মাঠে সক্রিয় হই। সুন্দরভাবে জেলা ছাত্রলীগ কমিটিকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি। এখনো মহানগর যুবলীগের কমিটির অপেক্ষায় দিন কাটিয়ে যাচ্ছি। জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অনেক সাবেক ছাত্রনেতারা এখনো কোন কমিটিতে ঠাঁই পায়নি। আমাদের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সিনিয়র নেতাদের প্রতি আহবান জানাই, আমাদের সাবেক ছাত্র নেতাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিন।
অন্যদিকে জেলা ছাত্রলীগের নিপু-আরাফাত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সানি-সুজন কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী হাসান সজীব জানান, ২০০৩ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ছাত্রলীগের দুইটি কমিটিতে রাজনীতি করেছি। জিএ আরাফাতের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছি। পরিচ্ছন্ন রাজনীতি অঙ্গণে ভূমিকা রয়েছে আমাদের। আমরা কোন গ্রুপিংয়ে থাকতে চাই না। পরিচ্ছন্ন একজন কর্মী হিসেবে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আছি থাকবো। ছাত্রজীবনের যদি ভালো করে থাকি, অবশ্যই কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের মত নেতাদের মূল্যায়ন করবে।
অন্যদিকে, মহানগর ছাত্রলীগ বিলুপ্ত হওয়ার ১ বছর পর চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নবাগত সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান মহানগর শাখার সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিশেষ কর্মী সভার আয়োজন করেন। ওই কর্মী সভা মহানগর ছাত্রলীগের ব্যানারে হলেও আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ কর্মী সভার তিন মাস হলেও এখনো মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের কোন লক্ষ্য দেখা যাচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :