প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন মহানগর বিএনপির একাংশের (বিদ্রোহী) নেতাকর্মীরা। যাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিদ্রোহীরা, সেই ব্যবাসায়ীর নাম আবু জাফর বাবুল।
জানা গেছে, বিএনপির সাবেক এমপি আবুল কালাম অসুস্থ থাকায় আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তার তেমন একটা আগ্রহ নেই। তাই মহানগর বিএনপির বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতা আতাউর রহমান মুকুল আসন্ন নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করতে চান। তবে মুকুলের এই নির্বাচনী যাত্রায় প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাবুল। কারণ বাবুল নিজে সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও মুকুলের প্রতিপক্ষ মহানগর বিএনপির অন্যান্য নেতাদের গোপনে অর্থ দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছেন-এমন খবর এখন সর্বত্র। মূলত মুকুলের মতো বাবুুলেরও নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে এমপি হওয়ার তীব্র মনোবাসনা রয়েছে।
এদিকে শুধু মহানগর বিএনপির নেতাদের সাথেই নয়, ঢাকার এক শীর্ষ বিএনপি নেতার সাথেও বাবুলের বেশ সখ্যতা রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিএনপির ওই শীর্ষ নেতার ও বাবুলের গ্রামের বাড়ি একই জায়গায় অবস্থিত এবং এরা একে অপরের আত্মীয় হয় বলেও একটি সূত্রে জানা গেছে।
তাই স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে ঢাকার সেই নেতা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বাবুলকে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে তারেক রহমানের কাছে তদবির করবেন। পাশাপাশি মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের বাবুলের জন্য নির্বাচনে প্রাচার প্রচারনায় অংশগ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিবেন। ফলে মুকুলকে নিয়ে নানা স্বপ্ন দেখা মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী নেতাকর্মীরা এখন বাবুলের গোপন তৎপরতা নিয়ে বেশ চিন্তিত। তবে বাবুলের এমন তৎপরতায় একটুও বিচলিত নন মুকুল এমনটাই জানা গেছে। তিনি নিজেও নির্বাচনকে সামনে রেখে গোপনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সূত্র বলছে, মুকুলের দ্বিতীয় ছেলে রেদওয়ানুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও তারেক রহমানের বন্ধু এম.এ মালেকের সাথে। রেদওয়ানুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে থেকে স্থানীয় একটি বিশ^বিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অধ্যায়ন করছে। লন্ডনে অবস্থিত বিএনপির প্রধান কর্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত আছে তার। তাই মনোনয়ন পাওয়ার জন্য বিএনপির কোনো শীর্ষ নেতা নয়, বরং নিজের ছেলেই মুকুলের ট্রামকার্ড হয়ে উঠতে পারে সামনে।
অন্যদিকে মুকুলের মতো বাবুলেরও লন্ডনে ঘনিষ্ঠজন রয়েছে। তার জামাতা লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির এক্টিং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অফিসের স্টাফ। আর বর্তমানে প্রাইম বাবুল নিজেও লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি নিয়মিত বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করছেন। আগামী ৮ এপ্রিল তিনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, সালাম ভাই (বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক) কিছু টাকার লোভে নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে মডেল মাসুদ এবং প্রাইম বাবুলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। তবে সেলিম ওসমানের সাথে এরা কোনো ভাবেই পারবেনা। সেলিম ওসমানের সাথে নির্বাচন করতে হলে, আবুল কালামকেই দরকার। সে ছাড়া অন্য কেউ সেলিম ওসমানের সামনেও যেতে পারবেনা। আর মুকুল সাহেব তো সেলিম ওসমানেরই লোক!
বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন, আগামীতেও এ আসনটি হয়তো বিএনপিকে ছেড়ে দিতে হতে পারে পারে। এ কারণেই এ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি আবুল কালামও খুব একটা নড়ছেন না। যদিও তিনি ভোটের মাঠে বেশ জনপ্রিয় এবং বাবার উত্তরসূরী হলে তিনবার এমপিও হয়েছিলেন। শারীরিক অসুস্থতায় তিনি এখন নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার কারণে সবশেষ সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বাধীন কমিটি এসেছে। সেখানে কালাম পন্থী নেতাদের অনেকটাই কোনঠাসা করে রাখা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :