নারায়ণগঞ্জ শহর কেন্দ্রীক বিএনপিতে নতুন একজন কুশীলবের আবির্ভাব হয়েছে যিনি নিজেকে এ দলের অঘোষিত নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাতে অবতীর্ণ হতে চলেছেন। এরই মধ্যে শহরের মিশনপাড়ায় তার অফিসে নিয়মিত যাচ্ছেন বিএনপির বিভিন্নস্তরের নেতারা। অনুগামীরা প্রচার করছেন তার টাকায় চলছে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম। বর্তমান কমিটি থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটি বড় সিদ্ধান্ত আসবে তার ঘোষণা মোতাবেক। কারণ তাঁর এক মেয়ের জামাতা এখন লন্ডনে বসবসারত বিএনপির নির্ধারক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অফিসের স্টাফ হিসেবে রয়েছেন। সেই খুঁটির জোরেই তিনি এখন বিএনপিকে নাচানোর চেষ্টা করছেন। আর সেই ঢোলের ঢাকের কাঠি নাড়ছেন কেন্দ্র থেকেও আসা কয়েকজন নেতাও যাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি বাণিজ্যকরণেরও অভিযোগ বেশ পোক্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি বেশ জটিল পর্যায়ে রয়েছে। গত নির্বাচনে এখানে বিএনপি তাদের শরীক দলকে আসন ছেড়ে দেয়। ২০১৮ এর ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে লড়েছিলেন আওয়ামী লীগ পদত্যাগী সাবেক এমপি এস এম আকরাম। কিন্তু জাতীয় পার্টির লাঙলের সঙ্গে কুলাতে পারেনি। এবারো এ আসন নিয়ে আছে নানা ধরনের মতভেদ।
বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন, আগামীতেও এ আসনটি হয়তো বিএনপিকে ছেড়ে দিতে হতে পারে পারে। এ কারণেই এ আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি আবুল কালামও খুব একটা নড়ছেন না। যদিও তিনি ভোটের মাঠে বেশ জনপ্রিয় এবং বাবার উত্তরসূরী হলে তিনবার এমপিও হয়েছিলেন। শারীরিক অসুস্থতায় তিনি এখন নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার কারণে সবশেষ সাখাওয়াত হোসেন খান ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বাধীন কমিটি এসেছে। সেখানে কালাম পন্থী নেতাদের অনেকটাই কোনঠাসা করে রাখা হয়।
এদিকে সাখাওয়াত ও টিপুর কমিটি আসার পরেই শহরের মিশনপাড়ায় গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবু জাফর আহমেদ বাবুলের অফিসে লোকজনের আনাগোনা বেড়ে গেছে। গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে এ অফিসে ফের লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। বিএনপির বিভিন্ন স্তরের লোকজন সেখানে যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছেন তদবির করতে আবার কেউ যাচ্ছেন ভবিষ্যৎ নেতা বনে যেতে। সেখান থেকেই ওই অফিসের বস আবু জাফর আহমেদ বাবুলকে কেউ কেউ উস্কে দিচ্ছেন আগামীতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে। বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকেও মাঝেমধ্যে এ অফিসে আনা হয়।
বাবুলের এক মেয়ের জামাতা লন্ডনে রয়েছেন। এক সময়ে তিনি পুলিশের এএসপি হিসেবে চাকরি করতো। পরে চাকরিচ্যুতের কারণে তিনি পাড়ি জমান ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে। সেখানে নানা কায়দায় চাকরি বাগিয়ে নেন তারেক রহমানের অফিসে। সেই সূত্র ধরেই নারায়ণগঞ্জ শহর বিএনপিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় লিপ্ত বাবুল এমন অভিযোগও দলের ভেতরে এখন বেশ কানাঘুঁষা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত দিনে অনেকবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছিলেন বাবুল। ওইসব ঘটনা ছিল বেশীরভাগ নেতিবাচক। এবার তিনি নিজেকে বিএনপিতে স্থান করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে আবু জাফর আহমেদ বাবুলের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন জানা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :