চলতি বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর ও বন্দর আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন সেটা নিয়ে ইতোমধ্যে নেতাকর্মীদের মাঝে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ২২ বছরের বেশি সময় ধরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের কোন এমপি পায়নি নেতাকর্মীরা। এ আসন থেকে লাঙল ফেলে নৌকা ভাসাতে চান মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতারা। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছে তার সমর্থকেরা।
তাদের দাবি, লাঙলের যাচাই আর সহ্য হচ্ছে না। দলের সভানেত্রী কাছে দাবি আনোয়ার হোসেনকে এই আসনের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে যাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে মহানগর আওয়ামীলীগের সকল নেতৃবৃন্দরা তাকেই জয়ের মালা তুলে দিবেন-মন্তব্য করেছেন আনোয়ার হোসেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে ঠেকাবে আওয়ামীলীগের একাংশ। যেভাবে জেলা পরিষদের নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন ঠেকিয়ে তার সহকর্মী চন্দন শীলকে চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়েছিলো।
মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে ঠেকাতে ইতোমধ্যে তারই সেক্রেটারী খোকন সাহাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১৯৯৬ সাল থেকে টানা সাধারণ সম্পাদক দায়িত্বপ্রাপ্ত খোকন সাহা রাজনীতি ছাড়া কোন কিছু এখনো পাননি দল থেকে। তাকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হওয়ার জন্য সমর্থকেরা তোড়জোড়ে করে তাকে নামাতে যাচ্ছে। খোকন সাহার বন্ধু এমপি শামীম ওসমানের সবুজ সিগন্যাল পেলে আনোয়ার হোসেন ঠেকাতে নামতে যাচ্ছে এমন গুঞ্জন রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি হিসেবে আনোয়ার হোসেনের নাম প্রকাশ হওয়া পর থেকে রাজনীতি অঙ্গনে আনোয়ার হোসেনে বক্তব্য অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেছেন, কারো বশ্য না হওয়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। কারো কথা শুনলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা আর না শুনলে হয়ে যায় রাজাকার। ২২টি বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা লাঙলের যাচাই পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা আর সহ্য করতে পারছে না, এই আসনেই আওয়ামীলীগের জন্ম। দলের সভানেত্রী কাছে অনুরোধ করি, এবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী দেন। বিজয়ের ফুলের মালা নিয়ে আপনার কাছে আমরা উপস্থিত হবো।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা বলেছেন, রাজনীতি করতে হলে লোভ, লালসা বাদ দিতে হবে। কি পেলাম, কি পেলাম না, হিসাব করলেই আমরা রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবো। আমাদের অনেক নেতা অনেক কিছু পাওয়ার পরেও আগামীতে আরো কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মাঠে নেমেছেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো সেই প্রত্যাশা বাদ দেন। অনেকেই অনেক কিছু পেয়েছেন, সব চাওয়া পাওয়া বাদ দেন। যারা পায়নি তাঁরা কিভাবে পাবে সেটা চেষ্টা করুন। সেটা চেষ্টা করলেই আপনি কর্মীবান্ধব নেতা।
মহাজোটের অধিনে চলতি বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশ না হলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টি পাশাপাশি আওয়ামীলীগের প্রার্থী দিতে যাচ্ছে। সেখানে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামীলীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হতে পারে নির্বাচনে। বিএনপি প্রার্থী কে হচ্ছেন এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তাদের সিনিয়র নেতারা। কিন্তু এমপি সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টি প্রার্থী হন তাহলে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহার নাম উঠে আসে। এখানে জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের সাথে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের লড়াই হলেও তাকে থামানো কাজ করবে আওয়ামীলীগের একাংশ।
আপনার মতামত লিখুন :