জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্ম বার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে দেখা মিলেনি সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগেও দেখা মিলেনি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার। আর এই দুইজনেই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারী। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁরা নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা থাকছেন।
জানা যায়, শুক্রবার (১৭ মার্চ) ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী। আর এই দিনটিকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশেই যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হয় বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী।
তারই ধারাবাহিকতায় এদিন সকালে শহরের দুইনং রেলগেইট এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন শেষে নিচ তলায় আলোচনা সভা, মিলাদ ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই কর্মসূচিতে অনুপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল।
একই সাথে এদিন সকালে শহরের দুই নং রেলগেইট এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন শেষে দ্বিতীয় তলায় আলোচনা সভা, মিলাদ ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন না মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।
যা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। নেতাকর্মীরা ধরে নিয়েছিলেন অন্তত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্ম বার্ষিকীতে একসাথে এক ব্যানারে এসে কর্মসূচি পালন করবেন। কিন্তু জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে দেখা মিলেনি যথাক্রমে আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল ও অ্যাডভোকেট খোকন সাহার। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতেও তাদের এই বিভক্তি পরিলক্ষিত হয়েছে।
দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের মধ্যে বিভক্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে। একের পর এক কর্মসূচিতে তাঁদের বিভক্ত অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। কমিটি ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচিতে একত্রে দেখা মিলেনি।
এর আগে, দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর শহরের ইসদাইর এলাকার ওসমান পৌর স্টেডিয়ামে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আর এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। সেই সাথে সম্মেলনের শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে আবারও পুনর্বহাল করা হয়েছিল। তবে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি তাদের দ্বারা।
এদিকে একই জায়গায় একদিন পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। সেই সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে নতুন করে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা কমিটির সম্মেলন করার জন্য বলা হয়।
আর এই সম্মেলন নিয়ে নানা আলাপ আলোচনা শেষে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১৮টি ওয়ার্ড সম্মেলন শুরু হয়। সবশেষ ১১ ফেব্রুয়ারি সরকারি তোলারাম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের ১৩নং ওয়ার্ডের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মধ্যে শহরে ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ জনের স্থলে ১০ জন ও বন্দরে ৯টি ওয়ার্ডে ১৮ জনের স্থলে ১ জনকে নির্বাচিত করতে পেরেছেন মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।
এরই মধ্যে ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অস্ত্রধারী নিয়াজুল ইসলাম খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া পর থেকে শামীম ওসমানের সাথে আনোয়ার হোসেনের মধ্যে আবারো প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে রূপ নেয়। অস্ত্রধারী নিয়াজুল ইসলাম খানকে গণমাধ্যমে সন্ত্রাসী বলা নিয়ে আনোয়ার হোসেনকে ভূষি খাওয়া নেতা আখ্যা দেন এমপি শামীম ওসমান। এরপর থেকেই মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গ ত্যাগ করে আসছেন।
আপনার মতামত লিখুন :