News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩, ১৬ চৈত্র ১৪২৯

মহানগর ছেড়ে জেলা আওয়ামী লীগে আরাফাত!


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৩, ১১:২১ পিএম মহানগর ছেড়ে জেলা আওয়ামী লীগে আরাফাত!

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বর্তমানে মহানগর ছেড়ে জেলা আওয়ামী লীগের যাচ্ছেন! রাজনীতি গুরু এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর হাত ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে এহসানুল হক নিপু সভাপতি ও জি এম আরাফাত সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। টানা ছাত্রলীগের দায়িত্ব থাকার পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দায়িত্ব পান আরাফাত।

২০১১ সালে জুন মাসে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে সাফায়েত আলম সানিকে সভাপতি ও মিজানুর রহমান সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। এর পর জি এম আরাফাত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যায়। এরপর থেকে রাজনীতিতে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের পাশে দেখা যায় আরাফাতকে। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচনে সাবেক এমপি এস এম আকরাম ও আনোয়ার হোসেনের পাশে সরব ছিল আরাফাত। এক প্রভাবশালী মহলকে উপেক্ষা করে তিনি নাসিক নির্বাচনের প্রার্থী ডা. আইভী পাশে সর্বত্রক ছিলেন। প্রচার প্রচারণা ও সভা সমাবেশে আইভী পাশে দেখা যেত আরাফাতকে। নির্বাচনের জয়ের পর কয়েক মাস পর একটা টেন্ডারে একজন ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে মেয়র আইভী থেকে দূরে সরে যান আরাফাত ও তার সমর্থকরা। ও ঘটনা থেকে আইভীর পাশে দেখা যায়নি আরাফাতকে।

এর কিছুদিন পর নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগ মহানগর শাখা রূপ দেয়ার পর থেকে আনোয়ার হোসেনের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন জি এম আরাফাত, আহসান হাবিব, ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, সাখাওয়াত হোসেন সুমন ও আলী হাসান সজীব। ২০১৫ সালে ৮ ডিসেম্বর দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন। ওই কমিটিতে মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের কোটায় তৃতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন জি এম আরাফাত। দায়িত্ব নেয়া থেকে ২০২২ সাল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আনোয়ার হোসেনকে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের রাজনীতির গুরু হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাকে বক্তব্যে দিতে দেখা গেছে। ২০২২ সালে ২৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে আনোয়ার হোসেনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান জি এম আরাফাত। এর মূলত ঘটনায় জানা যায়, ওই সম্মেলনে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন জি এম আরাফাত। কিন্তু অন্যতম শিষ্য এস এম আহসান হাবিবকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতাদের অবগত করেন আনোয়ার হোসেন। এমন সংবাদে আনোয়ার হোসেনের সাথে বাকবিতন্ডতা হয় জি এম আরাফাত ও ডা. আতিকুজ্জামান সোহেলের। এমন ঘটনা তখন আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমি কারো নাম প্রস্তাব করেনি। আহসান হাবিব ও জি এম আরাফাতের দ্বন্দ্বের কারণে আনোয়ার হোসেন বর্তমান রাজনীতিতে ধাক্কা খেতে হয়। বর্তমানে আনোয়ার হোসেনের পাশে শক্তিশালী নেতাদের দেখা যায় না। আহসান হাবিব ও তার সমর্থকরা কোন প্রতিপক্ষকে সামাল দিতে প্রস্তুত নন।

আনোয়ার হোসেনকে ছেড়ে আবারো মেয়র আইভীর কাছে ছুটে যান জি এম আরাফাত। আবারো ফিরে আসা নিয়ে মেয়র শিবিরে উল্লাসিত হলেও আরাফাত সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। তাঁরা জানান, মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আরাফাত সক্রিয়। তিনি মেয়র ডা. আইভী রাজনীতিতে গেলে তার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত বিষয়। মহানগর আওয়ামী লীগের আবারো এই কমিটি থাকলে আরাফাত কোন কোটায় একই পদে পাবেন এটা নিশ্চিত কেউ দিতে পারবে না। তাহলে মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোটায় আবারো আরাফাত পদ পাবেন?

অক্টোবর থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে জি এম আরাফাতকে দেখা যায়নি। এমনকি আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা গ্রুপের কোন অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায়নি। কিন্তু কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তাকে দেখা যায়। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচিতে জি এম আরাফাতকে দেখা যাচ্ছে মেয়র আইভী, আনিসুর রহমান দীপু, জাহাঙ্গীর আলম পাশে। মহানগর আওয়ামীলীগের ব্যানারে তাকে কোন শ্রদ্ধাঞ্জলি, পুস্পস্তবর্ক ও আলোচনা সভা দেখা যায়নি।

সম্প্রতি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপের দুই পক্ষে মারামারি ঘটনায় মামলা হয় থানায়। সেখানে জি এম আরাফাতের দুই বন্ধু ডা. সোহেল ও রিপনকে আসামী করা হয়। ওই ঘটনায় রিপন গ্রেপ্তার হলে ৩দিন জেল খেটে বের হতে হয়। অপরদিকে নিম্ন আদালতে জামিনের বদলে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসতে হয় আরাফাতের বন্ধু ডা. সোহেলকে। এতে বুঝা যায়, আনোয়ার হোসেন, মেয়র আইভী ও এমপি বাবু নিস্ক্রিয়তার কারণে থানা মামলা থেকে রক্ষা, নিম্ন আদালত থেকে জামিন নেয়া ও বাদীতে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হন জি এম আরাফাত। তার ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তার সমর্থকদের মধ্যে হতাশা দিন কাটাচ্ছে। একাধিক জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, তাহলে কি জি এম আরাফাত মহানগর ছেড়ে জেলা রাজনীতিতে আসছে?

Islams Group
Islam's Group