নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে পরিচ্ছন্নকর্মীদের বিক্ষোভ চলাকালে নেতাদেরকে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী কর্তৃক চাকরি খাওয়ার হুমকির ঘটনায় সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান।
তিনি বলেছেন, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরাও মানুষ। তারা তাদের দাবী নিয়ে গেল সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে। সেখানে পুলিশ দিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলো। আমাদের একজন যার জন্য আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছিলাম। আপনারা সকলে ভোট দিয়ে পাশ করিয়েছেন। এখন তিনি আপনাদের চাকরি খাওয়ার হুমকি দেয়। বলা হলো ভাত খাইতে ভাত পাস না, ফোন কিনস কই থেইক্যা। এটার উত্তর আমি দেব না, আমি উত্তর দেই, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে কোথাও কেউ ভাত না খেয়ে নেই শেখ হাসিনার আমলে। ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে টাকা নেই, এত বাড়ি কোথা থেকে হলো সে প্রশ্ন কে করবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি তার আদর্শকে চিনেছি। তুই তুকারি আল্লাহ পছন্দ করে না। আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। আমি এজন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে সকলের কাছে ক্ষমা চাই। হাতজোড় করে ক্ষমা চাই। আমি এ বিষয়ে বেশী কিছু বলতে চাইনি কিন্তু যেহেতু সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছে সেহেতু উত্তর দিয়েছি।
শামীম ওসমান বলেন, আলীরটেক ও বক্তাবলীর প্রতি আমার সব সময়ে একটি দায়বদ্ধতা কাজ করে। বিগত দিনে আমি এ দুটি এলাকাকে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য দিয়েছি। আগামীতে বেঁচে থাকলে বক্তাবলীকে নারায়ণগঞ্জের সুন্দর এলাকা বানাবো। এজন্য এলাকাকে ভালো মানুষ প্রয়োজন।
বুধবার ১৫ মার্চ বিকেলে বক্তাবলীতে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার ১৪ মার্চ দুপুর ৩টায় নগর ভবনে তিন শতাধিক পরিচ্ছন্নকর্মী ঝাড়ু নিয়ে প্রতিবাদ স্বরুপ আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ জানিয়ে নগর ভবন ঘেরাও করেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় নগর ভবন থেকে বিদেশী দাতা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল গাড়িযোগে প্রস্থানের সময়ে সামনে ময়লা আবর্জনা ফেলে দেওয়া হয়। পরিচ্ছনকর্মীরা ওই দাতা সংস্থার গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ এসে গাড়ি যেতে সহায়তা করে। ওই সময়ে হৈ চৈ শুনে অফিস কক্ষ থেকে নিচে নেমে আসেন আইভী।
এসময় নগর ভবনে ময়লা রেখে প্রতিবাদ করায় উত্তেজিত হয়ে যান তিনি। আইভী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাও করো, মেয়রকে ঘেরাও করে রাখতে চাও করো। এই নগর ভবনে ময়লা ফেলার দুঃসাহস দেখালে কেন? আর খাইতে ভাত পাওনা, আন্দোলন করো, এত দামি মোবাইল পাইলা কই? বাংলাদেশ সরকার কোনও সিটি করপোরেশনের তোমাদের চাকরি পারমানেন্ট করেনি। তাহলে নগর ভবনে তোমরা ময়লা ফেলার দুঃসাহস কেন দেখালে? এটা কোন ধরনের আচরণ? গত তিন মাস আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সচিব ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। তবে ফান্ডে টাকা না থাকায় তিন মাস ধরে কাউকেই বর্ধিত বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। আর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ কোনো সিটি করপোরেশনেই পরিচ্ছন্নকর্মীরা চাকরিতে স্থায়ী না। সরকার কাউকেই স্থায়ী করে নাই, তোমাদের আমি রাখলেও রাখতে পারি, নাও রাখতে পারি।
আইভী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল দাস, সাধারণ সম্পাদক কিশোর লালসহ সেখানে উপস্থিত মামুন চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।
আপনার মতামত লিখুন :