বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সমালোচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদের দুই অনুসারীর মধ্যে ১৩ মার্চ সোমবার ব্যাপক মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে নারী সহ অন্তত ১৫ জন। এ মাসুদের বিরুদ্ধে এর আগে এমপি সেলিম ওসমান নানা অভিযোগ তুলেছিলেন। বন্দরে বিভিন্ন সেক্টর দখল ও অরাজকতার পেছনে এ খান সাহেব জড়িত মন্তব্য করলেও পরবর্তীতে আবার তাঁর সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলতে দেখা য়ায় এমপিকে।
খান মাসুদের অনুগতদের সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থানার নূরবাগ এলাকার স্ট্যান্ড রাজু ও চিনারদী এলাকার চুল্যা রাজু মধ্যে কয়েক দিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে আকিব রাজু ও রাজুর বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। বিরোধের জের ধরে সোমবার দুপুরে বন্দর উপজেলাধীন মুখফলদি প্রাইমারি স্কুলের সামনে ছাত্রলীগ নেতা খান মাসুদের অনুগত উল্লেখিত দুই গ্রুপ শক্তি জানান দিতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একপক্ষ অপর পক্ষের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময়ে উভয় পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী সহ কমপক্ষে ১৫ জন জখম হয়। সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
স্ট্যান্ড রাজু অনুগতদের মধ্যে আহতরা হলো ছোনখোলা এলাকার মামুন, নাসির, অপু। চুল্যা রাজু পক্ষে আহতরা হলো চিনারদী এলাকার নিলুফা বেগম, ক্যান্দী এলাকার রহিম, বন্দর হাফেজীবাগ এলাকার আব্দুল, র্যালী আবাসিক এলাকার রুবেল, জামাইপাড়া এলাকার জাহিদ ও মুখফুলদি এলাকার সাইফুল।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, সংর্ঘের ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খান মাসুদ বন্দরের অলিখিত মাফিয়াদের খাতায় নাম লিখিয়েছেন। নিজ হাতে কোন অপকর্ম না করে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সকল অপকর্ম করে থাকেন। এমনকি পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে কাউকে তোয়াক্কা করছে না। নিজ দলীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরাও তার বিপরীতে অবস্থান করলে রোশানলে পড়তে হয়। এতে করে এক মূর্তমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে এই সন্ত্রাসী। পুরো বন্দর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা তাকে শেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠে খান মাসুদ বাহিনী। দখলে নেয় শীতলক্ষ্যা নদী তীর সংলগ্ন বন্দর সেন্ট্রাল খেয়া ঘাট এলাকার বিভিন্ন স্ট্যান্ড। বন্দর সেন্ট্রাল ঘাট এলাকার বিভিন্ন টেম্পু, বেবীট্যাক্সি ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলে থাকে খান মাসুদ বাহিনী। বন্দর স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়ে উঠে খান মাসুদ বাহিনী। এছাড়া সম্প্রতি ডিস ব্যবসা দখল নিয়েও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে খান মাসুদ।
এর আগেও খান মাসুদের বিরুদ্ধে ছিল নানা অভিযোগ। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী খান মাসুদকে ৬ রাউন্ড গুলি ভর্তি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। এসময় খান মাসুদের আস্তানা থেকে গুলিভর্তি বিদেশী পিস্তল ছাড়াও মদ, বিয়ার, গান পাউডার উদ্ধার করেন।
আপনার মতামত লিখুন :