News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৩, ১৬ চৈত্র ১৪২৯

খুনী খুনের তিলকে বিএনপি


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩, ১১:০৫ পিএম খুনী খুনের তিলকে বিএনপি

গত ১৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণার আগে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে খুব একটা কথা বলতেন না আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান। বরং তিনি এর আগে হুংকার ছুড়তেন জাতীয় রাজনীতি নিয়ে। গত ২৭ আগস্ট শহরে বিশাল সমাবেশেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের লক্ষ্য করে বক্তব্য দেন তিনি। যদিও এর আগে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাতের পর আকার ইঙ্গিতে বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনকে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন শামীম ওসমান। কিন্তু জেলা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে গিয়াসউদ্দিনের নাম আসার পর থেকে নতুন একটি শব্দ জুড়ে দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক বক্তব্যে বার বার তিনি ‘একজন খুনী’ ‘খুনী নেতৃত্বে’ বলে আসছেন। কিন্তু কখনই তিনি কারো নাম উল্লেখ করছেন না।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, শামীম ওসমানের উচিত স্পষ্ট নাম উল্লেখ করা। কারণ তিনি নিজেই বিভিন্ন বক্তব্যে বলেন তিনি কাউকে কেয়ার করেন না। তিনি যা বলেন স্পষ্ট বলেন। আল্লাহ ছাড়া কাউকে তিনি ভয় পান না। সেহেতু নারায়ণগঞ্জে বিএনপির খুনী কারা সেটাও স্পষ্ট জরুরী।

গত ২৭ আগস্ট সমাবেশে শামীম ওসমান বলেন, জেলা বিএনপির মামুন মাহমুদ। ভদ্রলোক মানুষ তিনি। কিছুদিন আগে তাকে ঢাকার রাস্তায় ছুরিকাঘাত করা হয়। আশেপাশের লোকজন দ্রুত তার ঘাতককে আটক করে পল্টন থানায় সোপর্দ করে। সেখানে স্বীকারোক্তিতে সে জানায়, নারায়ণগঞ্জের একজন এক্স এমপির ছেলে তাকে ভাড়া করেছে মামুন মাহমুদকে হত্যা করার জন্য। যদি সেদিন কোন অঘটন ঘটে যেত, তাহলে ত্বকী হত্যার মত আমাদের উপর দোষারোপ করা হতো।

২৬ জানুয়ারী জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষ্যে আদালতপাড়ায় সভায় শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির সাথে অত গণতন্ত্র চর্চা করার মানসিকতা আমার নাই। বিএনপির ভাই যারা আছেন তারা মনে রাখবেন ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত আপনারা কি করেছেন। এর আগে ৭৫ এর পরে যখন আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন এই নারায়ণগঞ্জে আপনারা কি করেছেন। এই কোর্টে অনেক আইনজীবীকে মার খেয়ে চলে যেতে হয়েছে। আমাদের বাদলকে পিস্তল ঠেকিয়ে উঠিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি এমন পরিমাণ অত্যাচার করা হয়েছিল লাশ কবরস্থানে নিতে দেয়নি। লাশের উপর গুলি করেছিল। আমাদের বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছিল। বাইতুল আমান ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল। সেলিম ওসমানের কারখানায় গিয়ে ৩০০ গরুর দুধের বান কেটে দেয়া হয়েছিল। শুধু সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এক খুনির নির্দেশে আমাদের ৯জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। ৪৯ জন লোককে আমাদের হাত দিয়ে দাফন করতে হয়েছে তাদের ক্ষমতার আমলে। এরা তারা।

২৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের নতুন পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন খুনীদের সঙ্গে কোন আলোচনা হবে না। নির্বাচনে আসলে আসুক না আসলে নাই। আমাদের এ নারায়ণগঞ্জেও অনেকে নেতা হয়ে আস্ফালন দেখাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে অনেক খুনিদের আস্ফালন দেখছি। যারা নারায়ণগঞ্জে কিছু বড় নেতার হওয়ার পরে নারায়ণগঞ্জে খুনের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিলো। খুনের রাজত্ব আমাদের দলে বাদ দেন বিএনপির নেতা তৈমূর আলম খন্দকারের ভাইকে হত্যা করা হয়েছিলো সাব্বিরকে। কারণ, সে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। দিনে দুপুরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো। এটা নারায়ণগঞ্জের সবাই জানে।

গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির ব্যানারে শহরে গণমিছিল বের হয়। ওই মিছিল চলাকালে চাষাঢ়াতেই অবস্থান করেন শামীম ওসমান। নিজ দল আওয়ামী লীগের সম্মেলন ছেড়ে তিনি কেন সেদিন নারায়ণগঞ্জ ছুটে এসেছিলেন ব্যাখা এসেছে তাঁর কণ্ঠেই।

বক্তব্য অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সম্মেলনের চেয়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির গণমিছিলটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল শামীম ওসমানের কাছে। শামীম ওসমানের কাছে গুরুত্ব হলেও সেই ব্যাখায় রীতিমত আতঙ্ক ভর করেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর।

শামীম ওসমান ২৬ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘সেদিন খবর ছিলো আমার কাছে। ওই দিন যে মিছিলটা (বিএনপির গণমিছিল) হবে, ওই মিছিলে এই এলাকারই এক সন্তান বিএনপি করে তাকে টার্গেট করা হবে। বিএনপির ভেতর থেকেই করবে। এই খবর শুনে আমি নারায়ণগঞ্জ চলে আসছি। বিএনপির মিছিলের পাশেই আমার গাড়ি নিয়ে বসেছিলাম। আমাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলো, আপনার উপর যদি হামলা হইতো? আমি বলছি, হইলে হইতো। আমাকে মাইরা যদি কেও খুশি হইতো, তাইলে হইতো। আমি যদি আগের শামীম ওসমান হই, তাহলে ওই দশ বিশ হাজার লোক আমার সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখে না। আমার কাজ ছিলো ওইটাকে ওয়াচ করা। ওনারাও দেখছে আমি বইসা আছি। ওনাদের মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, ওনারা চলে গেছেন। আমি শুধু এতোটুকুই বলেছি, যে ভাষাটা একটু সুন্দর করেন।’’

Islams Group
Islam's Group