নানা ধরনের মেরুকরণ নাটকীয়তা শেষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষণা হয়েছে। শনিবার (২৮ জানুয়ারী) শেখ রাসেল পার্ক জল্লাপাড়া লেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ১৭ ও ১৮নং ওয়ার্ড ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাকে সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর কবির হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়। ওই সময়ে কবির হোসাইনকে জামায়াত বিএনপির আতাঁতকারীদের এই পদে না রাখার জন্য স্লোগান দেন কাউন্সিলর মুন্নার সমর্থকেরা।
সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের পর দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতে মাইকে মহানগরের সেক্রেটারী খোকন সাহা বলেন, ১৮নং ওয়ার্ড প্রার্থী হচ্ছেন কারা? এ সময় পিছন থেকে কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার নাম হলে খোকন সাহা তার হাতে কাগজ কলমে উঠিয়ে নেন। অপরদিকে মঞ্চে প্রধান অতিথি মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন চেয়ার থেকে উঠে খোকন সাহার দিকে ছুটে যান। পরে তিনি কাউন্সিলর মুন্নাকে উদ্দেশ্য করে আনোয়ার বলে উঠেন, ‘‘এই কথা তো ছিলো না? তুমি আমার থেকে বেশি বুঝলে তো হবে না।’’
এরপর খোকন সাহার সঙ্গে কানে কথা বলেন আনোয়ার হোসেন। পরে হৈ চৈ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে খোকন সাহা উচ্চ সুরে বলেন, এখানে মুন্না নামও নাই কারো নাই। আপনার সবাই বসেন, সবাই মঞ্চ থেকে যান।
কামরুল হাসান মুন্নাকে প্রার্থী প্রত্যাহারের জন্য আনোয়ার হোসেন নির্দেশ দিলে খোকন সাহা তাকে মাইক তুলে দেন। মুন্না বলেন, ১৮নং ওয়ার্ডের সম্মানিত নেতাকর্মী যারা আছেন আপনারা আমার উপর আস্থা রেখেছিলেন ২০০৪ সালে। আপনাদের কাছে বলতে চাই আপনারা আমার সভাপতি আনোয়ার ভাই ও খোকন দাদাকে মানেন। তাদের যে কোন সিদ্ধান্ত মানবেন ইনশাআল্লাহ বলেন।
এর পরই ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নতুন কমিটিতে নতুন মুখ চেয়ে হৈ চৈ শুরু করে সমর্থকেরা। কোন জামায়াত বিএনপির আতাতঁকারীদের এই কমিটিতে দেখতে চাই না বলে স্লোগান দিলে আনোয়ার হোসেন চুপ থাকার জন্য ধমক দেয়।
মাইকে আবার খোকন সাহা বলেন, মুন্নার নাম প্রস্তাব আসলে আমরা তাকে রাখবো না। আপনারা কি আনোয়ার ও আমার কথা মানেন? এরপরও কবির হোসাইনের সামনেই তার বিরোধী সমর্থকরা তাকে জামায়াত-শিবিরের সাথে সম্পর্ক থাকার প্রমাণ আছে বলে স্লোগান দিতে থাকে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আনোয়ার হোসেনকে কাগজপত্র দেখিয়ে খোকন সাহা কোন বার্তা দিচ্ছিলেন। এর মুন্নাকে পুনরায় মাইক দিলে তিনি বলেন, এখানে কোন শব্দ হবে না। সভাপতি ও সেক্রেটারী যে দায়িত্ব বা ঘোষণা দিবেন তার সকল দোষ আমার উপর।
সবার শেষে আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘক্ষণ যাবৎ বক্তব্য শুনে যাচ্ছি। আপনারা আমাদের উপর আস্থা আছে শেখ হাসিনাও আমাদের উপর আস্থা আছে বলে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। ১৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা মুন্না ও কবিরের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছিলো আমরা যে সিদ্ধান্ত দিবো তারা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিবে। আপনারা যদি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন তার কিন্তু ঠিক হবে না। কারণ মুন্না কবির দুইজনই আমার কাছে ওয়াদা করে আসছে। আজকে মুন্না কবিরকে নাও দিতে পারি, এক্স এন্ড ওয়াইকে দিতে পারি ঘোষণা। এটা সকলকে মেনে নিতে হবে। শৃঙ্খলা সম্মেলন করতে চাই। আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ এলাকার সাইদুল হাসান বাপ্পী যেমন আদর করেছি তেমনি মুন্না ও কবিরকে আদর করি। আগে যেভাবে ছিলেন, তোমরা সেভাবে থাকো। সাইদুল হাসান বাপ্পী আদর্শ তোমরা ফিরে আনতে পারো।
এ সময় খোকন সাহা মাইকে ঘোষনায় বলেন, আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তে ১৮নং ওয়ার্ড সভাপতি কামরুল হাসান মুন্না। ঐক্যবদ্ধ রাখার স্বার্থে শহীদ বাপ্পী মত কথা মত সেক্রেটারী পদে কবির হোসাইনকে ঘোষণা করলাম।
ঘোষণার পর আনোয়ার হোসেন বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের সমন্বয়ে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ কমিটি তালিকা প্রদান করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :