আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান এমপি ও প্রভাবশালী নেত্রী মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সম্মেলনে চেয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি ওয়ার্ড সম্মেলনের দিনই নেতা নির্বাচিত করা হোক। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা ইতোমধ্যে বন্দরে ৬টি ওয়ার্ডের সম্মেলনের করেও এখনো নেতা নির্বাচিত করতে পারেনি। তাদের এমন কান্ডে তাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের সাহসী ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ১৯ বছর যাবৎ সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও ২৬ বছর যাবৎ সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা এখনো তৃনমূলে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের অনেক প্রার্থী ও তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, এমপি শামীম ওসমান মহানগর আওয়ামীলীগের এক নম্বর কার্যকরি সদস্য অপরদিকে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জনগণের প্রতিনিধি মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডে পরিচিত। ২৭ ও ২৮ জানুয়ারীতে শহরের ৪টি ওয়ার্ডের সম্মেলন হতে যাচ্ছে সেখানে শামীম-আইভীকে চান তৃণমূল। তারা জানান, সম্মেলনে শেষে যেই হোক না কেনো নেতা নির্বাচিত ঘোষণা করা হোক। আওয়ামী লীগের তৃণমূলে কাছে জনপ্রিয় নেতা শামীম ওসমান ও ডা. আইভী। তাদের উপস্থিতিতে ওয়ার্ড সম্মেলনগুলো হয়ে উঠবে আনন্দময় পরিবেশ ও শক্তিশালী সংগঠন।
গত বছর নভেম্বরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বোনের সাথে এক মঞ্চে বসতে চাই। প্রয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবে আমি কর্মী হয়ে নিচে বসবো। এমন বক্তব্যে রীতিমত মহানগরের তৃণমূলের মধ্যে আশার আরো জেগে উঠেছিলো। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু এখনো হয়নি। বন্দরে ৬টি ওয়ার্ড সম্মেলন চলাকালীন শামীম ওসমান ছিলেন, দেশের বাইরে। ডা. আইভীকে ওই সম্মেলনে দাওয়াতও দেয়া হয়নি।
বন্দরের ৬টি সম্মেলনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ। তিনি যদি সম্মেলনগুলো থাকলে পারলে ডা. আইভী কেনো শহর সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের সম্মেলনে থাকতে পারবে না? শামীম ওসমান এমপিকে ইতোমধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ১০টি ওয়ার্ড সাজিয়ে তোলা জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা দায়িত্ব দিয়েছেন। যার মধ্যে এখনো ওই ১০টি নিয়ে এখনো বসেনি আনোয়ার হোসেন, খোকন সাহা ও শামীম ওসমান।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দলীয় সভায় বলেছেন, আওয়ামীলীগের যে কোন প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাবেন। ভাই বোনের রাজনীতি বুঝি না, আমরা সবাই শেখ হাসিনার আদর্শের কর্মী।
১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী এক প্রার্থী জানান, আমরা সবাই শেখ হাসিনার কর্মী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে শেখ হাসিনার নিদের্শে আওয়ামীলীগ কর্মী হয়ে কাজ করি। কোন গ্রুপিংয়ে আমরা থাকি না। দলের প্রয়োজনে শামীম ওসমান ও ডা. আইভী কাছে যাই। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলনগুলো নিয়ে আমাদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ঐক্য নেই বলে তারা দুইটি ওয়ার্ড মিলিয়ে সম্মেলনগুলো করে যাচ্ছে। এমনকি ওই সম্মেলনগুলো সভাপতিত্ব করছেন মহানগরের সিনিয়র নেতা। এরও অযুহাতে জানা গেছে দুই ওয়ার্ডের সম্মেলনে যদি দুই সভাপতিই সভার সভাপতিত্ব করতে চান, তাহলে কি হয়ে দাঁড়াবে। তাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ তাদের অনুসারীদের প্রেসক্রিপশনে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মেলনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এই একটি ওয়ার্ডের সম্মেলন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জানা মতে, উদ্বোধক থাকবেন আনোয়ার হোসেন, প্রধান অতিথি থাকবেন নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, প্রধান বক্তা খোকন সাহা ও সভার সভাপতিত্ব করবেন ওয়ার্ড সভাপতি মনোয়ার হোসেন মনা। তাহলে বাকি ওয়ার্ডগুলো নিয়ে এমন করার মানে বুঝতেছি না।
১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী এক প্রার্থী জানান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের নেতারা ওয়ার্ড রাজনীতিগুলোতে দুর্বল করার কৌশল করে যাচ্ছে। সিনিয়র নেতাদের সাথে জুনিয়র নেতাদের মিলিয়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠনের পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এর ফলে যারা ওয়ার্ডে সিনিয়র নেতা হয়ে আছে, তাদের রাজনীতিতে ধ্বস নেমে পড়বে। এই ওয়ার্ডে সিনিয়র নেতার সাথে জুনিয়র নেতা দেয়া হচ্ছে বলে শোনা গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :