নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সম্মেলন নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এবিএম সোহরাব হোসেন। বৃহস্পতিবার সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকায় ওয়ার্ড কমিটিতে আসন্ন নেতাদের সংবাদ প্রকাশের পর এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় এ ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। বলেন, একটি বলয় থেকে যদি ওয়ার্ড কমিটি পছন্দে থাকে, তাহলে আমি সভাপতি প্রার্থী হবো না। আওয়ামীলীগের পতাকা তলে শেষ সময়টুকু পাড় করে যাবো। এই ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের জন্ম স্থান, কোন অপশক্তি কাছে দায়িত্ব দেয়া হয়, মহান আল্লাহ দরবারে মাধ্যমে দলের সভানেত্রী কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম।
তিনি জানান, আমরা তাহলে ১৭নং ওয়ার্ডে ১৭/১৮ বছর যাবৎ সভাপতি হয়ে কমিটিতে কি কাজ করলাম? কাউন্সিলর আব্দুর করিম বাবুকে ওয়ার্ডের সভাপতি বানাতে সকল প্রস্তুতি করা হয়েছে বুঝা যাচ্ছে। বাবু যদি সিটি কর্পোরেশনের মত আওয়ামীলীগকে নিজস্ব সম্পদ মনে করে কি আর করা। আমাদের নেতারা বাবু মত ছেলেকে আওয়ামীলীগের সভাপতি বানাতে ওয়ার্ড পরিচালনা কমিটিও করা হয়েছে। ২৮ জানুয়ারী যেখানে ওয়ার্ড সম্মেলনে সভাপতিত্ব হওয়ার কথা আমার সেখানে মহানগরের সহ-সভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল সভাপতিত্ব করবেন। এটা আওয়ামীলীগের কোন গঠনতন্ত্র লেখা রয়েছে আমার জানা নেই। দেখেন আমার বয়স শেষ পর্যায়ে এই শেষ বয়সে চেয়েছিলাম আওয়ামীলীগের শেষ ওয়ার্ড সম্মেলনে সভাপতিত্ব করা। ইচ্ছা ছিলো।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সম্মেলনে না থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো কিন্তু আওয়ামীলীগের মায়া ছাড়তে পারছি না। সম্মেলনে থাকবো, দেখি তারা কিভাবে কি কি করেন।
মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা নিদের্শনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট ১৭নং ওয়ার্ড সম্মেলন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে পাইকপাড়া বাসিন্দা মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, অর্থ সম্পাদক কামাল দেওয়ান, কার্যকরি সদস্য কাউন্সিলর আব্দুর করিম বাবু, ওয়ার্ড সভাপতি এবিএম সোহরাব ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস। এর মধ্যে এই ওয়ার্ডে তারা সক্রিয় আওয়ামীলীগার নন। পরিচালনা কমিটির ৫জন এরই মধ্যে একবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানেও রয়েছে প্রশ্ন; তারা পাইকপাড়া আরেক বাসিন্দা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক খালিদা হাসান ও ১৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আসাদউল্লাহকে সংযুক্ত করেছে কমিটিতে। এখানে আমার প্রশ্ন; আমাদের ওয়ার্ড সম্মেলন করবো। তাদের পরিচালনা করার দায়িত্ব কোন দিক দিয়ে প্রয়োজন ছিলো?
আব্দুর করিম বাবুকে পুরস্কার প্রশ্নে সোহরাব আরো বলেন, ঠিক বলেছেন বাবু পায় পুরস্কার আমরা পেলাম তিরস্কার। বাবু তো একটি পরিবারের বলয়ে কাজ করে থাকেন। এই যে দেখেন, সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান আমাদের দলের বা সমর্থনে প্রার্থী হয়ে এমপি হয়েছেন। ১৭ বছরেও একটি জিনিস আমাদের পাঠায়নি ওয়ার্ডের কোন মানুষের জন্য। কোথায় পাঠিয়েছে, আব্দুর করিম বাবু কাছে। নির্বাচন আসলে তো আমরাই তাদের পিছনে কাজ করি, তারপর সব ভুলে যায়। তাদের ইচ্ছায় হতে পারে আব্দুর করিম বাবু এই ওয়ার্ডের সভাপতি! এমন যদি চিন্তা করে থাকে, তাহলে আমাদের বলে দিলে তো হয়!!
১৭নং ওয়ার্ড সম্মেলন পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে রয়েছে ওয়ার্ডে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। একাধিক নেতা বলেছেন, পুরো কমিটিতে রয়েছে রহস্যময় ভূমিকা। সভাপতি প্রার্থীই যদি কমিটিতে থাকেন, তাহলে কাউন্সিল হবে কিভাবে? তার মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক নেতাকে রাখা হয়েছে কমিটিতে। তাহলে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর কাদিরকে কেনো রাখা হলো না? ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আসাদউল্লাহ যদি কমিটিতে থাকে, আব্দুর কাদির থাকতে পারে না কেনো? ও বুঝতে পেরেছি আসাদ উল্লাহ তো মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম আহসান হাবিবের ভাই বলে। ওয়ার্ড কমিটিতে আব্দুর করিম বাবু সভাপতি ও আসাদ উল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক করতে চায়, তাহলে সম্মেলন করে লাভ কি? ওই পার্টি অফিস থেকে ঘোষণা দেয়া হোক।
এদিকে আব্দুর কাদির প্রতিক্রিয়া জানান, আমিও তো পাইকপাড়া সন্তান। আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের কমিটির দুইজন রাখা হলো, আমাকে কেনো রাখা হলো না। আমি মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের এর প্রশ্ন তুলবো।
আপনার মতামত লিখুন :