বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এ সম্পদ বাংলাদেশের। এখানকার পরিবেশ ভিন্ন মেজাজের। এখানে আগাগোড়া আমাদের সংস্কৃতি ফুটে উঠবে। আজকের সমাবেশ সাংস্কৃতিক। সব জায়গায় রাজনীতি টেনে আনবেন না। এখানে স্লোগান পাল্টা স্লোগান কী আদৌ প্রয়োজন। আমাকে যার যার শক্তি দেখানোর চেষ্টা। আমি রাস্তায় বের হলে স্লোগান দিতে পারেন। তবে এখানে সে ধরনের স্লোগান মোটেও মানায় না। স্লোগান পাল্টা স্লোগান মোটেও আমার ভাল লাগেনি। আমি বিরক্ত হয়েছি। এটা আমাদের সংস্কৃতির আমানত। এটা আপনারা বজায় রাখবেন। এটা আমার অনুরোধ।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৯৬ সালে এ জাদুঘরের উদ্বোধনে এসেছিলাম। এখানকার বিখ্যাত জামদানি। এদের আরও উৎসাহ দেয়া দরকার। আন্তর্জাতিকভাবে এ শিল্প ও এখানকার পন্য সামগ্রী তুলে ধরতে হবে। এখানকার পন্য আমাদের জন্য লাভজনক। এ বিষয়গুলো নজর দিলে আমাদের এখানে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নে উজ্জীবিত হয়ে এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা সূচনা করেছিলেন সেটা স্বার্থক হবে।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন দেখে তাদের মনে অন্তরজ্বালা সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী একদিনে ১০০ ব্রীজ উদ্বােধন করেন। পরশুদিন নরসিংদীর ব্রীজের উদ্বােধনী ফলক পুড়িয়ে দিয়েছে একটি মহল। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দালন করতে আগ্রহী নয়। তাদের মধ্যে শুধু খাই খাই ভাব। তারা ভোটে হেরে যাবে তাই এমন করছে। অসুস্থ রাজনীতি করতে করতে মির্জা ফখরুলরা আজ অসুস্থ হয়ে গেছে। আমরা দেশে কোনো অশান্তি চাই না। প্রতিদিনই আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। যারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবে তার সমুচিত জবাব দিতে হবে। এখানে কোনো আপোস নেই। আমরা কোনো উস্কানি দিবো না। এইসব উস্কানি বন্ধ করতে আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে। তারা এইসব কর্মকান্ড করবে আমরা চুপ করে কি ললিপপ খাবো? তার সমুচিত জবাব আমরা দিবো।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এসএম রেজাউল করিম, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী মোহাম্মদ আবুল হাশেম খান, নেত্রকোণা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব মো. আবুল মনসুর, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতদশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন। এ বছর সোনারগাঁয়ের দারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাশেঁর কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগর দোলা, বায়োস্কোপ ও মিঠাই মন্ডার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে।
আপনার মতামত লিখুন :