News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

পুলিশ নির্যাতনে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম | স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম পুলিশ নির্যাতনে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে আসামি ধরতে গিয়ে নির্যাতন করে নূরুল ইসলাম (৫৫) নামের এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বুরুমদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নুরুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত ফালু মিয়ার ছেলে।

ঘটনার পর তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইলিয়াস আহমেদ ও একজন কনস্টেবলকে একটি কক্ষে আটক করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) শেখ বিল্লাল হোসেন ও সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম তাদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ছাড়িয়ে নেন।

নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নুরুল ইসলামের মৃত্যুর সংবাদে উৎসুক জনতা সন্ধ্যার পর থেকে ওই বাড়িতে ভিড় করেন। তার পরিবারের সদস্যদের তার মৃত্যুতে আজহারি করতে দেখা যায়।

তবে পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি পুলিশ দেখে স্ট্রোক করে মারা যান।

নিহতের ছোট মেয়ে মিথিলা আক্তার জানান, তার বাবা একজন পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ছিলেন। গত তিন বছর আগে ওপেন হার্ট সার্জারি হওয়ার কারণে বাড়িতে বেকার অবস্থায় রয়েছেন। তারা ৫ বোন। তার কোন ভাই নেই। ফলে তার বাবা মায়ের সংসারের খরচ নির্বাহ করেন বোনেরা।

সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের এএসআই ইলিয়াস আহমেদ ও আরও একজন পুলিশ সদস্য সাদা পোশাকে ঘরে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে তার বাবার হাতে হাতকড়া পরিয়ে একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে রাখে পুলিশ সদস্যরা। সেখানে তার বাবার সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। তারা তার বাবাকে কিল ঘুষি, লাথি ও তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে তাকে ছেড়ে দিতে এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না পেলে চলমান রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখানো হয়।

পুলিশ সদস্যের দাবির ৫০ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার পর ওই কক্ষে গিয়ে তার বাবাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। সেই সময়ে কোন শ্বাসপ্রশ্বাস ছিল না। পরে তাকে পার্শ্ববর্তী আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

মিথিলা আক্তার দাবি করেন, তার বাবাকে হাতকড়া পরিয়ে রাখাবস্থায় তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তবে তিনি পানি পান করা ও ইনহেলার ব্যবহার করতে চেয়েছেন। পুলিশ এগুলো ব্যবহার করতে দেননি। পুলিশ নির্যাতনে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের আরেক মেয়ে শিলা জানান, তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। তার বাবার হত্যাকা-ের জন্য বিচার দাবি করেন। তার বাবার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তিনি কোন রাজনীতি করেন না।

জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘নিহত ব্যক্তি একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। একাধিকবার পুলিশ তাকে গাঁজাসহ আটক করেছে। জানতে পারলাম আজও তাকে আটক করতে এসেছিল।’

তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করতে আসলে পুলিশ দেখে তিনি স্ট্রোক করে মারা যান। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, পুলিশ অবরুদ্ধ রাখার এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় এক ব্যক্তি স্ট্রোক করে মারা যান। পরবর্তীতে আর আসামি না পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে।

Islams Group
Islam's Group