শফিউদ্দিন আহমেদের জন্ম বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ধানকুনিয়া গ্রামে। তাঁর পিতা নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলে চাকরি করতেন। শফিউদ্দিন আহমেদ ১৯৬৭ সালে আবুল হাসেমের মাধ্যমে ঢাকায় কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। আবুল হাসেম ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান ও নেত্রকোনার প্রয়াত প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা দিলীপ সরকারের সাথে তৎকালীন ঢাকায় পার্টি জীবনের শুরুতে এক পার্টি সেলে (শাখায়) সদস্য ছিলেন শফিউদ্দিন আহমেদ। শফিউদ্দিন আহমেদ যখন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হয়েছিলেন তখন পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত হবার প্রক্রিয়া চলছে। আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে মতপার্থক্যের কারণে দেশে দেশে কমিউনিস্ট পার্টি দুই ভাগে ভাগ হচ্ছে। শফিউদ্দিন আহমেদ যে বছর (১৯৬৭ সাল) কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন সেই বছর পার্টির পিকিংপন্থী অংশ আলাদা হয়ে কংগ্রেস করে পার্টি থেকে বেরিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল) গঠন করে। এর এক বছর পর ১৯৬৮ সালে কথিত মস্কোপন্থী অংশের কংগ্রেসে এই অংশ পুনর্গঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির মাত্র দুইজন সদস্য (সুখেন্দু দস্তিদার ও মো. তোয়াহা) ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সকলেই এ অংশের সাথে ছিলেন। শফিউদ্দিন আহমেদ মস্কোপন্থী অংশের সাথে থাকেন। তিনি তখন (সাবেক সিপিবি সভাপতি) মনজুরুল আহসান খানের সাথে ঢাকায় এক শাখার সদস্য ছিলেন।
বিভিন্ন মতপার্থক্যের প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের আগে আগে (সম্ভবত ১৯৭০ সালে) নাসিম আলীর নেতৃত্বে মণি সিংহের নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বেরিয়ে এসে তারা হাতিয়ার গ্রুপ নামে একটি আলাদা কমিউনিস্ট গ্রুপ গঠন করেন। এই বেরিয়ে আসার প্রশ্নে (শফিউদ্দিন আহমেদ যেভাবে বলেছেন) স্ট্যালিনের মূল্যায়ন নিয়ে বিতর্ক ছিল অন্যতম একটি বিষয়।
এই গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন নাসিম আলী। নাসিম আলী তখন আদমজী জুট মিলে শ্রমিক ইউনিয়নের দায়িত্বে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অমল সেনের নেতৃত্বে হাতিয়ার গ্রুপসহ কয়েকটি ছোট ছোট কমিউনিস্ট গ্রুপ একত্রিত হয়ে লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়। শফিউদ্দিন আহমেদ এদলের সাথে যুক্ত ছিলেন। এরপর কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন ইউ পি পি, রণো - মেননের নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি, পরবর্তীতে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ এবং সর্বশেষ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
তিনি জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একটানা প্রায় ৫৫ বছর নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সাধারণ বীমা কর্পোরেশনে চাকরি করতেন এবং ঐ প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নারায়ণগঞ্জের পাট শ্রমিকদের কয়েকটি ঐতিহাসিক আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন। বিদ্যুৎ, ড্রেজার, আই সি আই, ঢাকা ভেজিটেবল অয়েলসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। কখনো কখনো শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারীর দায়িত্বও পালন করেছেন। নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক আন্দোলনে তার ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। তিনি ছিলেন একজন প্রচার বিমুখ মানুষ। নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বর্তমানে যারা জীবিত আছেন তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে প্রবীণ। এ জেলার শ্রমিক আন্দোলনে তিনি আমাদের কাছে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তি। নেপাল নাগ, অনিল মুখার্জি, সুনীল রায়দের কিছু (সময়) পর থেকেই তিনি নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে ছিলেন। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে পর্যন্ত শ্রমিক আন্দোলনে তাঁর দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
তিনি ছিলেন একজন মার্ক্সবাদী। তাই বিপ্লবী ধারার শ্রমিক আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন। শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার চেষ্টা সবসময় অব্যাহত রাখতেন। বিপ্লবের প্রয়োজনেই তিনি শ্রমিক আন্দোলন করতে শুরু করে ছিলেন। ১৯৮০ এর দশকে আমরা অনেকে তার হাতেখড়ি দিয়ে শ্রমিক আন্দোলনে এসে ছিলাম। আমি ১৯৮৪ সালে শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে ছিলাম; শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে শফিউদ্দিন আহমেদ ছিলেন আমার নেতা।
শফিউদ্দিন আহমেদ জীবনের প্রায় পুরো সময়টা কাটিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার গোদনাইল শিল্পাঞ্চলে। উনার বাবা চাকরি করতেন লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলে। ফলে উনার বাবার চাকরি জীবন কেটেছে গোদনাইল শিল্পাঞ্চলে। শফিউদ্দিন আহমেদের ছোট বেলাও কেটেছে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিল এলাকায়। পরবর্তীতে শফিউদ্দিন আহমেদ তাঁর নিজের চাকরি জীবনেও থেকেছেন এ অঞ্চলে। শেষ জীবনে এ অঞ্চলের পাঠানতুলীতে বাড়ি করে ছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে গোদনাইল শিল্পাঞ্চলেই কেটেছে তাঁর সারাটা জীবন। এ অঞ্চলে দীর্ঘকাল তিনি অনেকগুলো বড় বড় প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ছিলেন। এসকল প্রতিষ্ঠানের বেশি অংশে তিনি শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে তুলে ছিলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ ও গোদনাইল শিল্পাঞ্চলে বড় বড় সকল শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক আন্দোলন ও সংগঠনের সাথে তিনি কোন না কোনভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৮৪ সালে আমি যখন শ্রমিক আন্দোলনে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হই তখন লক্ষ্মীনারাণ, চিত্তরঞ্জন, ঢাকেশ্বরী, আই,সি,আই, সমবায় শিল্প সংস্থা, বিদ্যুৎ, ড্রেজারসহ আদমজী জুট মিল পর্যন্ত গোদনাইল শিল্পাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে আমাদের শ্রমিক সংগঠনের কমিটি ছিল। এ অঞ্চলের প্রতিটি জুট বেলিংয়ে সংগঠনের কমিটি ছিল। আদমজী জুট মিলে আমাদের একটা ইউনিয়ন ছিল, ফেডারেশনেরও কমিটি ছিল।
ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলেও শফিউদ্দিন আহমেদের উদ্যোগে অনেকগুলো ছোট বড় শিল্প কারখানায় শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে উঠেছিল। এর মধ্যে ছিল ঢাকা ভেজিটেবল অয়েল শ্রমিক ইউনিয়ন, ঢাকা ভেজিটেবল অয়েল কর্মচারী ইউনিয়ন, বেঙ্গল ডাইং শ্রমিক ইউনিয়ন, বাই সাইকেল শ্রমিক ইউনিয়ন, ফরহান সিল্ক মিলস্ শ্রমিক ইউনিয়ন, আফসার অয়েল মিলস শ্রমিক ইউনিয়ন, চিটাগাং ষ্টীল মিলস্ শ্রমিক ইউনিয়ন, ক্যাপিটাল গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন। এ ছাড়াও আমার উদ্যোগে গঠন করে ছিলাম পাকপাঞ্জা রুলিং মিলস্ শ্রমিক ইউনিয়ন। এসকল শ্রমিক ইউনিয়ন ছাড়াও হোসেন জুট, হোসেন পেপার, মজুমদার গার্মেন্টসহ ফতুল্লা শিল্পাঞ্চলে অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মধ্যে আমাদের ফেডারেশনের কমিটি ছিল।
নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে ছিলেন শফিউদ্দিন আহমেদ। ১৯৮৪ সালে ক্যাপিটাল গার্মেন্টসে প্রথম শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে ছিলেন তিনি। এরপর ফোর ব্রাদার্স গার্মেন্টস, মাস্টার গার্মেন্টস, রাসেল গার্মেন্টস ও মজুমদার গার্মেন্টসহ বেশ কয়েকটি গার্মেন্টসে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়ে ছিল, ডি-ফর্ম সই করে কাগজপত্র রেডি করেও বিভিন্ন কারণে আর অগ্রসর হওয়া যায়নি।
শফিউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়ে ছিল কমিউনিস্ট পার্টি দিয়ে। তিনি পার্টি সদস্য পদ পেয়ে ছিলেন ১৯৬৭ সালে। তখন শুরুতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মনজুরুল আহসান খানের সাথে ঢাকায় এক পার্টি শাখার সদস্য ছিলেন। এরপর সম্ভবত ১৯৭০ সালে হাতিয়ার গ্রুপের সাথে সিপিবি থেকে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে সর্বশেষ ছিলেন (মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অমল সেন, রনো-মেনন ও আবুল বাশারের (শ্রমিক নেতা) সাথে ‘হাতিয়ার গ্রুপ’ যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটি গঠন করে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি, ইউ পি পি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ এবং সর্বশেষ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিতে ছিলেন। এদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনে ভাঙ্গা গড়া, উত্থান পতনের কারণে এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শফিউদ্দিন আহমেদের মতো অনেক নেতৃত্বকেই আসতে হয়েছে। ১৯৮০ এর দশকে ১৫ দলীয় জোট গঠন হলে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ১৫ দলীয় জোটের একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন। শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ গঠন হলে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা ছিলেন। তিনি কয়েক বার শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কও ছিলেন। ১৪ দলীয় জোট গঠন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ১৪ দলীয় জোটের একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলার বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ও ১১দলীয় জোটের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিরও প্রথম সারির একজন নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির একজন উপদেষ্টা। যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকেছেন। সবকিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন আমাদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ও সম্মানীয় নেতৃত্ব।
শফিউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন বটে কিন্তু তিনি ছিলেন মূলত একজন শ্রমিক নেতা। শ্রমিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিকেই গড়ে তুলতেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে ছিলেন এবং শ্রমিকদের মধ্য থেকেই পার্টি গড়ে তুলেছেন। বড় বড় শিল্পে বড় বড় শ্রমিক ইউনিয়ন পরিচালনা করেছেন, বড় বড় আন্দোলনও করেছেন, কিন্তু কখনও বিন্দুমাত্র ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের চিন্তা করেননি। আন্দোলন ও সংগঠনকে ব্যবহার করে কখনো ব্যক্তিগত সুবিধা উদ্ধারের চিন্তা করেননি। প্রথম দিকে পারিবারিক জীবনে অনেক আর্থিক কষ্টের মাঝে থেকেছেন, কখনো সততা ও আদর্শ বিক্রি করেননি।
তিনি ছিলেন বিজ্ঞান চেতনায় বিশ্বাসী শতভাগ অসাম্প্রদায়িক একজন মানুষ। ধর্ম, বর্ণ বা জাত-পাতের কোন ভেদাভেদ তাঁর মধ্যে ছিল না। তিনি একজন বড় মাপের নেতা ছিলেন, কিন্তু প্রদর্শনবাদ, অহংকারবোধ কিংবা ব্যক্তিগত নাম প্রচারের মোহ তাঁর ছিল না। কথাবার্তা ও আচরণে ছিলেন খুব উঁচু মনের ও উঁচু মাপের। মার্কসবাদ ও শ্রমিক শ্রেণির রাজনীতি তিনি মনেপ্রাণেই গ্রহণ করে ছিলেন। জীবনযাপন ও সংস্কৃতিবোধের দিক থেকে তিনি ছিলেন অতি সাদাসিধে প্রকৃতির। শ্রমিক শ্রেণির সাথে একেবারে সহজেই মিশে যাবার মত সকল যোগ্যতা তিনি অর্জন করে ছিলেন।
শ্রমিক আন্দোলন ও সংগঠনের প্রতিনিধি হয়ে পৃথিবীর বহু দেশে গিয়েছেন, প্রতিনিধিত্ব করছেন। ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ অনেক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেছেন।
২০১৮ সাল থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকতেন। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ছিলেন বাংলাদেশর ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
অর্ধ-শতাব্দির বেশি কাল ধরে শফিউদ্দিন আহমেদ নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মার্কসবাদে বিশ্বাসী একজন কমিউনিস্ট হিসাবে তিনি শ্রমিক আন্দোলনে আজীবন বিপ্লবী ধারা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। মেহনতী মানুষের চূড়ান্ত মুক্তির সংগ্রামেও তিনি নিবেদিত ছিলেন। আমরা তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিতে চাই। লাল সালাম শফিউদ্দিন আহমেদ।
আপনার মতামত লিখুন :