নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী রহমত উল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া প্রসঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সি মশিয়ার রহমানের আদালতে শুনানি শেষে এই আপিল খারিজ করে দেয়া হয়। সেই সাথে এই খারিজের মধ্য দিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের জিপি অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম বলেন, রহমত উল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভেঙ্গে ফেলার পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হয়েছে মর্মে আদালতকে অবগত করে। এনিয়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত ২৮ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন। সেই সাথে আদালত সিটি কর্পোরেশনের আপিলটি খারিজ করে দিয়েছেন।
এর আগে শুনানির দিনে আদালতে উপস্থিত থাকা আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছিল, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষের আইনজীবীরা ভবন ভাঙ্গা প্রসঙ্গে কমিটির সভায় সম্মতির বিষয়টি নজরে আনতে চাইলে আদালত বলেন, এগুলো পরের বিষয়। সিটি কর্পোরেশন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে পারেন না। সিটি কর্পোরেশন কাজটি ভালো করেনি। সেই সাথে বিচারক আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার বিচারকি জীবনে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অপরাধে একজন জেলা প্রশাসককে দন্ডাদেশ দিয়েছিলাম। আমি বুঝে শুনেই এই আপিলের রায় দিবো।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে পৌরসভার দায়িত্বে থাকার সময় নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী রহমত উল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভবন ভাঙ্গার চেষ্টা করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয় সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে। সেই সময়ই ভবনটির উচ্ছেদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রীট (যাহার নং-১৫২৮/২০০৮) করা হয়। উচ্চ আদালত রীটের প্রেক্ষিতে ভবনটিতে কোন রকম উচ্ছেদ কার্যক্রম না করতে ১০ দিনের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। একই বছরের ৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জ চতুর্থ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে শুধু মাত্র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে বিবাদী করে ভবনটি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা করা হয় (মামলা নং-২৩/২০০৮)।
এই মামলায় ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর যাবতীয় শুনানি শেষে মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে ডিক্রি হয়, ‘রহমত উল্লাহ ইনস্টিটিউট ভাঙ্গা বা বিবাদীদের বেদখল করার বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো’। সেই স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার কোন রকম আপিল না করেই মেয়র আইভীর ২০১৯ সালের ২০ জুন ভবনটি ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনায়ও মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে ‘আদালতের নির্দেশ অবমাননা’র মামলা বর্তমানে চলমান রয়েছে। একই সাথে ক্ষতি পূরণের দাবিতে আরেকটি মামলাও চলমান রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :