দুর্নীতি করে অঢেল সম্পত্তির মালিক সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান এখন কারাগারে। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার মামলায় অবশেষে তিনি আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন। সোমবার (৬ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে শুনানী শেষে মতিকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি ছিলেন যুবলীগের এই নেতা। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গত জুনে ওই পরোয়ানা জারি হলেও তিনি ছিলেন অধরা। পরোয়ানার চিঠি পায়নি মর্মে পুলিশ জানায়। বিপরীতে মতিও প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়ান সর্বত্র। নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় রাইফেল ক্লাব সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা সমাবেশে মতির দেখা মিলেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহবায়ক ও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি সোমবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান কাউন্সিলর মতির জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মঈনুল হাসান রওশনী।
উল্লেখ্য অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান (মতি) ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় ১-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামি কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে ৬ কোটি ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার ৬৩৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৮২ কোটি ৫১ লাখ ৪২৪ টাকা জমা করে তার থেকে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৯ টাকা উত্তোলন করে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অবস্থান গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, কাউন্সিলর মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৬১ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩৯৫ টাকা জমা করেন। এর পর সেখান থেকে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ টাকা উত্তোলন করে তা রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগ আনা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :