নগরীর দিগুবাবুর বাজারে পাইকারি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা কেজি। তবে খুচরায় সেই আলুই ৬০ থেকে ৬৫ টাকার কমে বিক্রি করতে চায় না বিক্রেতারা। খুচরা এবং পাইকারি দরে আলু বিক্রিতে এতো বেশি তারতম্যের কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা দেখাতে থাকেন নানান অযৌক্তিক অজুহাত।
এদিকে ক্রেতা ও বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে জেলা প্রশাসন এবং সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত নজরদারি বা মনিটরিংয়ের অভাবে আলু ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করেই আলু বিক্রি করে যাচ্ছেন। যার দরুণ অতিরিক্ত মূল্যে আলু কিনতে এক প্রকার বাধ্য হচ্ছেন বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) শহরের দিগুবাবুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ২৫০ টাকা, পাইকারি দরে প্রতি কেজি ৪৬ টাকা এবং খুচরায় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এ সময় ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, পাইকারি ৪৬ টাকা হলে খুচরা সর্বোচ্চ ১০ টাকা বেশি রাখা যেতে পারে, তবে এখানে এই ব্যবধানটা ২০ টাকা হয়ে যায়। এক বা দুই কেজি আলু কিনলে গুনতে হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা।
মোহসিন মিয়া নামে বন্দরের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি দুই কেজি আলু কিনছি, সেজন্য আমার কাছে প্রতি কেজির দাম ৬০ টাকা করে রাখছে। আর পাইকারি কিনলে ৪৬-৪৮ টাকা। এতো ব্যবধান কেন হইব, বলেন? ওরা বলে কোল্ড স্টোরেজ থেকা দাম বাড়ায়। আসলে সেখানেও দাম বাড়ায় আর এখানে আসলে ওরাও বাড়ায়। বাজারে মনিটরিং ঠিক মতো হইল এগুলো সব ঠিক হইয়া যাইত।’
বাজারে আলু কিনে হতাশা প্রকাশ করা চান মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখানে সব সিন্ডিকেট। আলু ব্যবসায়ীরা মিলে পুরো বাজারে একটা সিন্ডিকেট হইসে। ওদের বাহিরে গিয়ে কেউ কম দামে বিক্রি করতে পাওে না। সাধারণ পাবলিকের কাছে এক দামে বিক্রি করে আর মোবাইল কোর্ট দেখলে দাম কমে যায়, আমি নিজে এর সাক্ষী।’
রমজান নামে এক আলু ব্যবসায়ী বলেন, আমারা মোকাম থেকে যেই দামে কিনি, তার থেকে কিছু বেশি দামে বিক্রি করি। খুচরা বিক্রিতে অনেক আলু পচা বের হয়, নষ্ট বের হয়। এই কারণে দাম বেশি। আর পাইকারি বিক্রি করলে সেটা নষ্ট, পচা সব কাষ্টমারের ঘাড়ে। সেই কারণে দাম কম। আমরা কোনো বেশি দামে বিক্রি করতাছি না ভাই, প্রয়োজনে যাচাই করে দেখেন আপনারা।
জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ ভোক্তা অধিকারের উপ-পরিচালক সেলিমুজ্জামান বলেন, আপনারা তো জানেন যে এগুলো দুষ্ট চক্র। আমাদের ভোক্তা অধিকারে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় আমরা ঠিকমতো অভিযান করতে পারছি না। তাই জেলা প্রশাসন এবং নাসিকের বাজার কর্মকর্তারা মিলে একসাথে কাজ করলে ভালো হয়। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডিসি অফিসে স্থানীয় আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য চিঠি এসেছে, আশাকরি তারা দ্রুত মাঠে নামবে।
আপনার মতামত লিখুন :