News Narayanganj
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০

মনে হয়েছিল কেয়ামত শুরু


দ্যা নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২৩, ১০:৫১ পিএম মনে হয়েছিল কেয়ামত শুরু

‘‘হঠাৎ করে বাস থেমে গেল। বাইরে প্রচুর হৈ চৈ আর স্লোগান শুনছিলাম। কিছু বুঝার আগেই দেখলাম সবাই বাস থেকে যে যার মত দৌড়ে নামতে শুরু করেছে। কিন্তু আমার সঙ্গে ৪ বছরের শিশু সন্তান ছিল। তাকে নিয়ে নামতে নামতে তিনদিক থেকে ছোড়া ইটপাটকেল ভেতরে ঢুকতে শুরু করে। মনে হয় যেন কেয়ামত শুরু হয়েছে। হঠাৎ করে পেছনে গ্লাস ভেঙে বড় একটি ইট ভেতরে এসে আমার পায়ের কাছে এসে পড়ে। কোনমতে রক্ষা পেয়ে কোনমতে ছেলেকে নিয়ে বাস থেকে নামি। পাশের একটি রঙয়ের দোকানে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেই। পায়ে একটু আঘাত লেগেছে। কিন্তু আমার ছেলের কান্নায় আমি আরো বিমর্ষ হয়ে গেছিলাম। এগুলো কেমন রাজনীতি ? আমাদের মত নিরীহ মানুষকে এভাবে আঘাত করা হলো। আমাদের কি দোষ?’’

২ নভেম্বর বেলা পৌনে ৩টায় শহরের চারারগোপে কালীরবাজার এলাকাতে দেলোয়ার টাওয়ারের সামনে উৎসব পরিবহনের বাসের যাত্রী রোকেয়া বেগম এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, ছেলেকে নিয়ে তিনি পিজি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে ডাক্তার দেখিয়ে তিনি গুলিস্থান এসে উৎসব পরিবহনের বাসে চড়েন। পুরো রাস্তা ছিল ফাঁকা। তাই দ্রুত বাস চলে আসে। অর্ধেক ছিল যাত্রী। চাষাঢ়া এসে বেশীরভাগ যাত্রী নেমে যাওয়ার পর রোকেয়া বেগম সহ ৭-৮ জন ছিল বাসে।

তিনি এও জানান, ঘটনার জন্য তিনি ছিলেন অপ্রস্তুত। সে কারণে ছেলেকে নিয়ে নামতে দেরী হয়। কিছুই তিনি বুঝতে পারেনি। পরে তিনি জেনেছেন বিএনপির লোকজন ওই হামলা করেছে।

বন্দর আমিন আবাসিক এলাকা নিবাসী রোকেয়া বেগমের আক্ষেপ ‘‘আজকে যেভাবে বড় সাইজের ইটপাটকেল ছোড়া হয়েছে শরীরে পড়লে বড় ধরনের বিপদ হতো। মারাত্মক জখম হতে পারতেন। এটা কোন রাজনীতি না। এটা মানুষ হত্যার চেষ্টা বৈকি।’’

ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য তিনি ছবি ও ভিডিও করতে বারণ করেন। তবে সঙ্গে থাকা ৪ বছরের সাদিক নামের ছেলেকে দেখা গেছে প্রচন্ড ভীত। তাকে বার বার চিপস ও খাবার দিয়েও শান্ত করতে পারছিলেন না রোকেয়া বেগম।

প্রসঙ্গত টানা তিনদিনের ডাকা অবরোধের শেষ সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে মিছিল বের করে বাস ভাঙচুর করেছে মহানগর বিএনপি। শহরের কালীরবাজার এলাকায় উৎসব ও বন্ধন পরিবহনের দুটি বাসে ভাঙচুর চালায় দলটির নেতাকর্মীরা।

দলটির মহানগরের সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে এই মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে কালীরবাজার গিয়ে শেষ হয়। মিছিল চলাকালে ঢাকা থেকে ফেরা দুটি বাস সামনে পরলে হামলা চালায় অবরোধ সমর্থকরা। ইটপাটকেল ও লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করা হয় বাসের কাঁচ। আগুন থেকে বাচতে দ্রুত বাসের চালক স্থান ত্যাগ করে।

Islams Group
Islam's Group