নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মাসদাইর বাজার থেকে উত্তরে তালা ফ্যাক্টরির মোড় পর্যন্ত শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায়। এতে দীর্ঘদিন ধরে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ ও পথচারীরা। বিশেষ করে এই সড়কের দুই পাশে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত বিসিকের কালিয়ানী খাল দিয়ে কয়েকটি এলাকার ড্রেনের পানি বের হয়। তবে গার্মেন্ট মালিকদের উদাসীনতায় সেই খালটি দিয়ে এখন আর ড্রেনের পানি বের হতে পারেনা। তাই দীর্ঘদিন ধরে ১৩নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
মাসদাইরের বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা বেগম রতœা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে যেই রাস্তাটি আছে সেটি সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায়। এতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বছরজুড়েই কষ্ট করতে হয়। অনেক বাচ্চাদের পায়ে ঘাঁ হয়ে যায় ময়লা পনির জন্য। তবে আমি আসার পর এই সমস্যার কোনো সমাধান দেখতে পাইনি। অথচ এই রাস্তাটি সংষ্কার অথবা এটার একটি সমাধান করা জরুরী হয়ে পরেছে।
মাসদাইর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন বলেন, ৫ থেকা ৬ বছর ধইরা দেখতাছি একটু বৃষ্টি হইলেই এখানে পানি জমে। আমি এর জন্য জনপ্রতিনিধি খোরশেদ ভাইরে জানাইসি। তিনি বলছে বিসিকের খাল দিয়া পানি বের হইতে পারেনা। তাই বলে-কি আমরা সারাজীবন এটার জন্য কষ্ট করমু।
তিনি আরো বলেন, এই রাস্তার পাশে ৩ টা স্কুল ১টা মসজিদ। বৃষ্টি হইলে যখন এই রাস্তা ডুইবা যায়। তখন মুসুল্লিরা মসজিদের নামাজ পড়তে আসতে পারেনা। আবার স্কুলের বাচ্চারাও স্কুলে যাইতে পারেনা। দেখা যায়, অনেক সময় বাচ্চারা রিক্সা থেকে পানিতে পইরা গিয়া ব্যাথাও পায়। তাই দ্রুতই এই রাস্তাটা ঠিক করতে হইবো।
জানতে চাইলে নাসিকের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, আমার ১৩ নং ওয়ার্ডের কিছু এলাকার ড্রেনের পানি গলাচিপা হয়ে শীতলক্ষ্যায় যায়। আর মাসদাইর ও আশেপাশের কিছু এলাকার পানি বিসিকের কালিয়ানী খাল দিয়ে বের হয়। তবে বিসিকের গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা ঝুট এবং আবর্জনা ফেলে কালিয়ানী খাল ভরে ফেলেছে। তাই সেখান দিয়ে আমার এই এলাকার ড্রেনের পানি বের হতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমি এ নিয়ে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান সাহেব ও হাতেম সাহেবকে অভিযোগও। পাশাপাশি তাদের কাছে লিখিত চিঠিও পাঠিয়েছি। কন্তিু এখনও তারা এটার কোনো সমাধান করেনি। তাদের ফান্ডে কোটি কোটি টাকা তারা কি পারেনা এই খালটি পরিষ্কার করতে?
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বিসিকের এমবি নীট ফ্যাশনের নির্বাহী পরিচালক ও গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ‘র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আসলে জলাবদ্ধতার কারণে শুধু ১৩ নং ওয়ার্ডের বাসীন্দাদেরই কষ্ট হয়না আমার অনেক শ্রমিকও এর জন্য ভোগান্তি পোহায়। আমি এই বিষয়টি ইউএনওকে জানিয়েছি, ডিসি সাহেবকেও জানিয়েছি। মূল সমস্যা গার্মেন্ট ব্যবসায়ীদের জন্য তৈরী হচ্ছেনা। কাশীপুরের যেই খালটি দিয়ে কালিয়ানী খালের পানি নদীতে যায় সেখান দিয়ে মানুষ হাঁটতে পারে। তাহলে সেখানেও কি গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা ঝুঁট ফেলেছে? তবুও আমি চেষ্টা করবো এই সমস্যা সমাধানের।
আপনার মতামত লিখুন :