নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামরুল হাছান মুন্না বলেছেন, আমি বেশ কিছুদিন পূর্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সঙ্গে একটি মিটিংয়ে শহীদনগর ও আলামিন নগরের কিছু অংশের ভূমি বন্দোবস্ত না হওয়ার বিষয়ে কথা বলেছিলাম। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এলাকাবাসীকে বারবার বলার পরেও এলাকাবাসী আমার কাছে আবেদন নিয়ে আসেনি। এলাকার মধ্যে কেউ কেউ বলে বেড়ায় মেয়র নাকি আপনাদের জায়গা নিয়ে নিবে। কিন্তু আমি বলতে চাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে লাখ লাখ লোককে জায়গা দিয়েছেন। আপনাদের জায়গা আপনাদেরই থাকবে।
শহীদনগর ও আলামিননগর এলাকায় ময়লা ফেলা বিষয়ে কাউন্সিলর মুন্না বলেন, আমি বেশ কিছুদিন পূর্বে ময়লা ফেলা নিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে আপনাদের নিস্ক্রিয়তার কারণে মেয়র উল্টো আমাকে বলেছেন তোমার এলাকার লোকজনতো কেউ কিছু বলে না। আমি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এলাকাবাসীর স্বার্থে যেসব দফতরে আবেদন দেয়ার দরকার দিব।
১৮নং ওয়ার্ডে লেক নির্মাণ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর মুন্না বলেন, আমি এর আগে যখন কাউন্সিলর ছিলাম তখন আমি মেয়রকে প্রস্তাব দিয়ে ছিলাম আমার ওয়ার্ডে এক বিঘা জমিতে একটি স্কুল, এক বিঘা জমিতে একটি কমিউনিটি সেন্টার ও একটি লেক করার। স্কুলের পেছনে ৫ শতক জায়গা চেয়ে ছিলাম স্কুলের জন্য। এসব বিষয়ে লিখিত প্রস্তাবনাও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমার পরে যিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি কেন কোন উদ্যোগ নেননি জানি না। আগামী ৪ বছরের মধ্যে ১৮নং ওয়ার্ডে লেক নির্মাণ করতে পারবো কিনা জানি না, তবে আমাদের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সারাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে একজন ডায়নামিক মেয়র। দাতা সংস্থার আস্থার জায়গা। দাতা সংস্থার কাছে দৃষ্টান্ত। আমি গত মেয়াদে থাকাকালীন কদমতলা ব্রীজ থেকে বটতলা ব্রীজ হয়ে মন্ডলবাড়ি ব্রীজ পর্যন্ত (আলী আহাম্মদ চুনকা স্টেডিয়াম) খালের দুই পাড় বাঁধাই করে লেক নির্মাণের প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। তখন উনি এটা পজেটিভলি নিয়েছিলেন। আমি বর্তমানে এলাকার স্বার্থে কি করা যায় এটা নিয়ে চিন্তা করছি। বর্তমানে এলাকায় জায়গা কম।
কাউন্সিলর মুন্না আরো বলেন, আমাদের এই এলাকা থেকে শহীদনগর হয়ে সৈয়দপুর পর্যন্ত ৬৯টি মাদরাসা। অনেকগুলো মাদরাসা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার নেতিবাচক রিপোর্ট রয়েছে। আমার কাছে একটি মাদরাসা সম্পর্কে তথ্য রয়েছে যেই মাদরাসাটি একজন নারীর নামে ভাড়া নেয়া। অথচ ওই মাদরাসাতে শেখানো হয় নারী নেতৃত্ব হারাম। পাশাপাশি মাদরাসাগুলো পরিচালনা করছেন বহিরাগতরা। ওইসব মাদরাসাতে নাকি বিদেশ থেকেও অর্থ আসে। বেশি অর্থ পেয়ে অনেকে মাদরাসার জন্য ভাড়া দিচ্ছেন। কিন্তু সেসব মাদরাসায় অনেক শিক্ষার্থীকে জঙ্গিবাদে উৎসাহ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব সম্পর্কে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
মাদক ইস্যুতে কাউন্সিলর মুন্না বলেন, আগে আমি লাঠি নিয়ে দৌড়াতাম। কিন্তু এখন বয়স হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়েছে। এখন ইচ্ছে করলেও আগের মতো যাওয়া সম্ভব না।
জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান সম্পর্কে তিনি বলেন, সন্তান জন্ম হওয়ার পরে মিষ্টি থেকে শুরু করে আকিকা, জন্মদিনসহ নানা ইস্যুতে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ান। কিন্তু সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করেন না। তবে যখন জন্মনিবন্ধন খুবই প্রয়োজন হয় তখন তাঁরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং তাৎক্ষণিক জন্মনিবন্ধন চান। কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে চাইলেই আমরা তাৎক্ষণিক জন্মনিবন্ধন দিতে পারি না। কারণ এটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এপ্রুভ দিলে তারপার আমরা দিতে পারে। সন্তান জন্ম নেয়ার ৪৫ দিন পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন ফ্রি হলেও বেশিরভাগ মানুষই সময়মতো জন্মনিবন্ধন করেন না।
টিসিবির কার্ড বিতরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকে কার্ড বিতরণ নিয়ে অনিয়ম করেছেন। যেকারণে আমি ৭ শতাধিক কার্ড আটক করেছি। অনেকেই ২ বা ততোধিক কার্ড করেছেন। তাদের কার্ড আমি আটকে রেখেছি। পাশাপাশি অনেকে বহিরাগতদের কার্ড বিতরণ করেছেন। সেসব কার্ডও আমি আটক করেছি। এ বিষয়টি আমি মেয়রকেও জানিয়েছি।
এলাকার উন্নয়ন ইস্যুতে তিনি বলেন, আমার পূর্বতন কাউন্সিলর সাহেব সকল অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থেকেছেন কিন্তু পাইপলাইনে ১৮নং ওয়ার্ডের কোন উন্নয়ন প্রকল্পই নেই। সে এলাকার উন্নয়নে কোন চাহিদাই দেয়নি। এখন আপনারা বলতে পারেন এক বছর পার হয়ে গেল কিন্তু কোন দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে না কেন। এখন পাইপলাইনে কোন প্রকল্প না থাকলে উন্নয়ন করবো কিভাবে।
আপনার মতামত লিখুন :