৫৭ বছরে পদার্পণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। এমপি হিসেবে তিনি যতটা না পরিচিত তার চেয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আরো বেশী পরিচিত। ১০ মার্চ তাঁর জন্মদিন।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আক্রান্ত হয়ে বেঁেচ গেছেন তিনি। আর সৃষ্টিকর্তার কৃপার কারণেই এবার তিনি জন্মদিন পালন করতে পারছেন।
জানা গেছে, দেশের ভয়াবহ গ্রেনেডে হামলার একটি রাজধানীতে ২১ আগস্ট। সেই হামলার দিন আহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন। সেখানে আহতদের মধ্যে একজন ছিলেন নজরুল ইসলাম বাবু যিনি নারায়ণগঞ্জ-২ তথা আড়াইহাজার আসনের এমপি।
হামলায় সেদিন প্রথমে অজ্ঞান অবস্থায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে বাবুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সিএমএইচ এ নেওয়া হয়। সেখান থেকে সিকদার মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়া হয়। ভারতে অপারেশন করে কয়েকটি স্পিøন্টার বের করা সম্ভব হলেও অসংখ্য স্পিøন্টার শরীরে রয়ে যায়। এখনও শরীরে থাকা স্পিøন্টারগুলো মাঝে মাঝে অসহনীয় যন্ত্রনা দেয় এমপি বাবুকে।
নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ভয়াবহ ২১ আগস্ট রাজনৈতিক ইতিহাসের জঘন্য ও কলঙ্কিত একটি দিন। স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্র ওইদিন হায়নার মত গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ষড়যন্ত্র, লোভ-লালসা আর পেছন দরজা দিয়ে ক্ষমতা যাওয়ার জন্য ওই দিন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার ঘৃণ্য মতলব হাসিল করার পাঁয়তারা করে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে বিএনপি জামাত। তৎকালীন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি বক্তব্য প্রদানের শেষে তাঁর হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগুচ্ছিলেন ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। এসময় শুরু হলো নারকীয় গ্রেনেড হামলা। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে পরপর তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু ১৯৬৭ সালে ১০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের বাজবী গ্রামের মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। দুপ্তারা সেন্ট্রাল করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে এসএসসি, ১৯৮৪ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে এইচ এস সি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং সবশেষে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলায় নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে গুরুতর আহত হন বাবু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধন্য এই নেতা নৃশংস গ্রেনেড হামলায় আহত হওয়ার পাশাপাশি এক-এগারোর সময়ে কারাবন্দি শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি ১৯৮৮ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করে সাড়ে তিন মাস এবং বিএনপি জোট সরকারের সময় ২০০২ সালে গ্রেফতার হয়ে ১১ মাস কারাভোগ করেন। কারান্তরীণ থাকাকালেই ২০০২-২০০৬ মেয়াদের বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চিরচেনা আড়াইহাজারকে বদলে দিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :