সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ শহরে লাইসেন্সবিহীন ও অনুমোদনহীন শতাধিক ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিয়মিত রোগী দেখা ও চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করে ক্লিনিক মালিকরা জিম্মি করে রাখছে রোগীদের।
শহরের খানপর এলাকায় ৩০০ শয্যা হাসপাতাল এবং নিতাইগঞ্জে ১০০ শয্যা সরকারি জেনারেল হাসপাতাল রয়েছে। এই দুইটি হাসপাতালে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই হাজার রোগী বিভিন্ন রোগের জন্য চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণ ও তদারকি না থাকায় সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই সরকারি দুইটি হাসপাতালে প্রায় শতাধিক দালাল রয়েছে যারা ডাক্তারের সহযোগিতায় রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে দিচ্ছে। সরকারি ডাক্তাররা ক্লিনিকে নিয়ে তাদের চিকিৎসা-অপারেশন করছে।
শহরের কয়েকটি নামকড়া ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ ক্লিনিকের কোন লাইসেন্স নেই। আবার অনেক ক্লিনিকের লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি।
মএকটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, তাঁরা সকল নিয়ম মেনে ক্লিনিক চালু করতে প্রায় দুই বছর চলে গেছে অথচ শহরের আনাচে কানাচে নোংরা পরিবেশে ক্লিনিক গড়ে উঠছে। সেখানে চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসা হচ্ছে। রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শহরের খানপুর ৩০০ বেড হাসপাতালের পাশেই গড়ে উঠেছে কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারি হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার এই ক্লিনিকগুলোতে নোংরা পরিবেশে অপারেশন ও সিজার করছেন।
শামীমুর রহমান নামের একজন রোগীর অভিভাবক জানান, তিনি খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ডাক্তার ফয়সাল আহমেদ এবং জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার ইউসুফ আলী সরকারের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমানের কাছে অভিযোগ করেছি। কিন্তু সিভিল সার্জন কোন প্রকার তদন্ত করেনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্লিনিক মালিক জানান সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী ক্লিনিক লাইসেন্স করার জন্য অনেক যন্ত্রপাতিসহ রোগীদের জন্য অনেক ফ্যাসেলিটি রাখতে হয় যেগুলি তাদের নেই। এ কারণে অনেকেই নতুন করে লাইসেন্স কিংবা পুরনো লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছে না। ফলে অবৈধভাবে ক্লিনিকগুলো চালানো হচ্ছে। প্রতিমাসে একবার করে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করার নির্দেশনা থাকলেও কোন প্রকার পরিদর্শন করা হচ্ছে না বলে ক্লিনিক মালিকদের অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জনবল সংকটের কারণে ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। তবে কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :