নারায়ণগঞ্জের ১০০ শয্যা ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে এখানো কমেনি ডায়রিয়ার প্রকোপ। এখনো প্রতিদিন এই হাসপাতালে ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন বলে জানা গেছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ দিনে ৬৬০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা যায়।
চিকিৎসক এবং নার্সরা জানান, নারায়ণগঞ্জের ওয়াসার পানি অত্যাধিক দূষিত। তাই দূষিত পানি থেকেই স্থানীয় মানুষের ডায়রিয়া রোগ বেশি হচ্ছে। এছাড়া তীব্র তাপদাহ, ভেজাল খাদ্য ও বাড়িঘরের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশও দায়ী ডায়রিয়া বৃদ্ধির জন্য। তাই এ বিষয়ে একমাত্র জনসচেতনতাই এখন ডায়রিয়া রোগ কামাতে সাহায্য করতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার মুশিউর রহমান বলেন, অতিরিক্ত গরম এবং দূষিত পানির কারণে এখানে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। স্থানীয় মানুষ যদি খাবার পানি এবং বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে, তাহলে ডায়রিয়ার প্রকোপ কমবে। আমাদের ১০০ শয্যা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের সেবা নিশ্চিতকরণে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া আছে। লোক-বলেরও কোনো সংকট নেই।
পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় শিশু সন্তানকে নিয়ে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে আসা দেওভোগের রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলেটা গত দুই দিন ধরে খালি পাতলা পায়খানা ও বমি করছে। তাই আজকে সকালে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসি। আসার পর ইমার্জেন্সির ডাক্তার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করাইসে। নার্সরা স্যালাইন দিসে। আবার কিছু ওষুধও লিখে দিসে। স্যালাইন দেওয়ার পর এখন ছেলেটা আগের চেয়ে সুস্থ আছে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা বলেন, মানুষের পেটের মধ্যে এক ধরনের সুপ্ত জীবানু থাকে। সেই জীবানুগুলো এপ্রিল-মে মাসে জেগে উঠে এবং পেটে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করে। এটি ডায়রিয়া রোগের অন্যতম কারণ। আমি সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছি যে, আপনারা বিশুদ্ধ পানি পান করুন। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন। তাহলেই ডায়রিয়ার থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স জাহিদুল আলম বলেন, প্রতিদিন এখানে ১০০ জনের কাছাকাছি ডায়রিয়া রোগী আসছে। আমরা এদের সকলকেই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। জরুরী বিভাগে সব সময় ডাক্তার থাকে। রোগীদের সেবা পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এদিকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শিউলি আক্তার বলেন, ডায়রিয়া পরিস্থিতি আগের চেয়ে একটু নিয়ন্ত্রণেই আছে। আগে প্রতিদিন ১০০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হতো। এখন তার চেয়ে একটু কম। মূলত গরম বেশি থাকায় ঈদের সময়টাতেই আমাদের চাপ বেশি ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :