মুক্তিযুদ্ধের উদ্দীপক জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের রোষানলে পড়েছিল নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একটি গ্রামের অধিবাসীরা। ৫৪জন নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে ব্রাশ ফায়ার করে তাদের মরদেহে বাশের মুলি রেখে গানপাউডার ছিটিয়ে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিয়েছিল পাক হানাদার বাহিনী। ৪ এপ্রিল সেই ঘটনার ৫২ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আজ। একাত্তরের সেই ঘটনার পর থেকে বন্দর এলাকার লোকজন প্রতিবছর দিবসটিকে ‘বন্দর গণহত্যা দিবস’ হিসেবেই পালন করে আসছে।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠে ‘অমর বাঙালী’ নামের একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকের মূল বিষয় ছিল সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তানীদের আগ্রাসন। ওই নাটকের কুশীলবদের থেকে শুরু করে দর্শকরাও এক সঙ্গে স্লোগান তুলেছিল, ‘জয় বাংলা’। আর মুক্তিযুদ্ধের উদ্দীপক এ স্লোগান দিতে গিয়েই গ্রামের লোকজন পড়েছিল পাকিস্তানী রাজাকার ও হানাদার বাহিনীর রোষানলে। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে পাকিস্তানীরা। নাটকের অভিনেতা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ৫৪জন নিরস্ত্র গ্রামবাসীকে নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার ৯দিন পর ৪ এপ্রিল ব্রাশ ফায়ার করে তাদের মরদেহে বাশের মুলি রেখে গানপাউডার ছিটিয়ে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেয়া হয়। ৪ এপ্রিল সেই ঘটনার ৫২ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে আজ। একাত্তরের সেই ঘটনার পর থেকে বন্দর এলাকার লোকজন প্রতিবছর দিবসটিকে ‘বন্দর গণহত্যা দিবস’ হিসেবেই পালন করে আসছে। সে দিনের ঘটনায় শহীদদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, ছমিরউদ্দিন সরকার, মমতাজউদ্দিন মাস্টার, রেজাউল ইসলাম বাবুল, আলী আকবর, আমির হোসেন, নায়েব আলী, আলী হোসেন, ইউসুফ আলী, সবুজ চন্দ্র কানু, যমুনা চন্দ্র কানু, লছমন চন্দ্র কানু, কানাই লাল কানু, গোপাল চন্দ্র , ভগবত চন্দ্র, দূর্গা চরণ প্রসাদ, নারায়ণ চন্দ্র প্রসাদ, ইন্দ্র চন্দ্র দাস, সুরেশ চন্দ্র দাস, দিগন্ত চন্দ্র বর্মন, বনেল চৌধুরী, মোবারক, হারাধন মাস্টার, নারায়ণ চৌধুরী, পরেশ দাস। এছাড়াও আবুল বাসার খান, মোঃ মোস্তফাসহ অনেকে সেদিন বন্দরের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে শহীদ হন।
আপনার মতামত লিখুন :