দেশসেবার মহান ব্রত নিয়ে চাকরি করার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। তাদের কেউ লিখেছেন উপন্যাস, গল্প, কবিতা আবার কেউ লিখেছেন গোয়েন্দা কাহিনী, কিংবা গীতিকবিতা। তাদের মননশীল লেখা এরইমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে সাহিত্য জগতে। সেইসঙ্গে পাঠকদের মধ্যেও সাড়া পড়তে শুরু করেছে।
তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) মোহাম্মদ নাজমুল হাসানের একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটির নাম ‘নির্জন শোভাযাত্রা’। বইটি শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। যেটি এবছরের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ৬৭ থেকে ৬৯ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে অনলাইনে রকমারি ডটকম থেকেও বইটি সংগ্রহ করা যাবে।
বই লেখার অনুপ্রেরণা প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখিসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত ছিলাম। ‘নির্জন শোভাযাত্রা’ আমার প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ। আমরা সবাই যে যে পেশায় থাকি না কেন দিনশেষে আমরা সবাই মানুষ। আমরা সমাজকে খুব কাছ থেকে দেখি। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়। আমরা খুব কাছ থেকে সবাইকে প্রত্যক্ষ করি, পর্যবেক্ষণ করি।
তিনি বলেন, আমার এই বইটিতে মানুষ, মানুষের মন, দ্রোহ-দহন, প্রেম-অভিমান কিংবা ভালোবাসার কথা রয়েছে। আমরা বিষণœতার কথা বলি কিংবা স্বপ্নের কথা বলি, এই বিষয়গুলোর স্পষ্ট উচ্চারণ রয়েছে আমার এই নির্জন শোভাযাত্রা কাব্যগ্রন্থে। এখানে দেশপ্রেমের কথা রয়েছে। এখানে মানবিকতার কথা রয়েছে। আমার এই বইটির স্বার্থকতা তখনই হবে যখন এই বইটির একটি বা দুইটি লেখাও যদি কারও মনে এতটুকু জায়গা করে নিতে পারে।
পাঠকদের মধ্যে বইটির সাড়া প্রসঙ্গে নাজমুল হাসান বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, একজন নবীন লেখক হিসেবে যতটা প্রত্যাশা নিয়ে বইটি লিখেছি এর চেয়েও বেশি মানুষের সারা পেয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি হলো, একজন লেখকের জন্য স্বার্থকতা হলো বইটি পড়ার পর মানুষের যে প্রতিক্রিয়া। অনেকেই সে প্রতিক্রিয়ায় স্বতঃস্ফূর্ত এবং আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের মতামত জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলবো বই পড়তে হবে। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা কিংবা গল্পের বই, কবিতা কাব্যগ্রন্থ কিংবা উপন্যাস এগুলো পড়া উচিত। এগুলো আমাদের ইতিহাস-সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কবিতা সাহিত্যের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। কবিতার উৎসব হওয়া উচিত, কবিতার জাগরণ হওয়া উচিত। আমি মনে করি শহরে নগরে গ্রামে কবিতার চর্চা হওয়া উচিত।
নাজমুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পরবর্তীকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এমপিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এরপর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেছেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জে কর্মরত আছেন। স্ত্রী রুবাইয়া খান জ্যোতি এবং কন্যা শেহজিন নাওয়ার উশানকে নিয়েই তার সংসার।
আপনার মতামত লিখুন :