নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ২০ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদের অর্জন ও আরো জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর ওই চার্জশীট দাখিল করা হয়।
চার্জশিট থেকে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার পরে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারী করা হলে তিনি গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী স্থাবর সম্পদের মূল্য ৫ কোটি ৬৫ লাখ ১ হাজার ২২৪ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ৮০৩ টাকাসহ মোট ৯ কোটি ৬২ লাখ ৪২ হাজার ২৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এর ঘোষনা প্রদান করেন।
তদন্তকালে দেখা যায়, মতির স্থাবর সম্পদ ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭, হাজার ২৮৩ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০, হাজার ৮০৩ টাকা যার সর্বমোট মূল্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮ হাজার ৮৬ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। যার মধ্যে গোপনকৃত সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৬২ লাখ ৮২ হাজার ৭৫৩ টাকা। অন্যদিকে তার ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ১১৩ টাকা জমা করে তার থেকে পরবর্তীতে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৮ টাকা উত্তোলন করা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
আসামী মতিউর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭(১) ধারায় এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তার বিরুদ্ধে গত ২০ ডিসেম্বর কমিশনের আদেশক্রমে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দাখিল করা হয়।
অন্যদিকে, মতির স্ত্রী রোকেয়া রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার পরে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারী করা হলে তিনি গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে অনুযায়ী স্থাবর সম্পদের মূল্য ১ কোটি ৪৯ হাজার ৮৩০ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ২০ কোটি ২০ হাজার ৮০০ টাকাসহ মোট ১ কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার ৬৩০ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এর ঘোষণা প্রদান করেন।
তদন্তকালে মোট স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ৫ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৭ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আয়কর বিভাগে বিশেষ সুবিধায় বৈধ করেছেন ২ কোটি ২২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৩২ টাকা ও অন্যান্যভাবে ২০ লাখ ২০ হাজার ৮০০ টাকাসহ মোট ৮ কোটি ৩৫ লাখ ৬ হাজার ৬১৯ টাকা। গোপনকৃত সম্পদের পরিমান ২ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩২ টাকা। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমান ৮ কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৯ টাকা।
তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে আরও দেখা যায় যে, আসামী রোকেয়া রহমান কর্তৃক দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩২ টাকার সম্পদের হিসাব প্রদর্শন না করে মিথ্যা তথ্য সম্বলিত সম্পদ বিবরণী দাখিলসহ ৮ কোটি ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯১৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ।
আপনার মতামত লিখুন :