স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, হরতাল শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছিল। আমি যখনই স্বরাষ্টমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছি তখনই প্রধানমন্ত্রী সৃষ্ট শিল্প পুলিশের মাধ্যমে আমাদের নারায়ণগঞ্জে কোনো শ্রমিক অসন্তোষ আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিকেএমইএর ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে নারায়ণগঞ্জের ৩৬টি জেলাভিত্তিক ও ১১টি জাতীয়ভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
একই সাথে এদিন নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নতুন ভবন উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সেলিম ওসমান বলেন, একসময় একটি বিরোধী দল আমাদের প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের পাটকলগুলো বিক্রি করে দিয়েছিল। তখনই আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিলেন তোমরা ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করো। আমরা দিশা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সে সময় উনারই দেয়া নাম বিকেএমইএ ৭০ জন সদস্য একত্রিত হয়ে রপ্তানি কাজ শুরু করলাম। আমরা এখন শুধু নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে বছরে দশ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারছি। নিটওয়্যার বেশিরভাগই এ নারায়ণগঞ্জ থেকে রপ্তানি হয়। নারায়ণগঞ্জের বিসিককে শিল্প নগরী করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসপি সবসময় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কাজ করছে। নারায়ণগঞ্জের শিল্প পুলিশ সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে। যেখানেই অশান্তি সেখানেই শিল্প পুলিশ। তাদের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে মালিক শ্রমিক যেই অশান্তি সৃষ্টি করবে তার বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভবনের উদ্বোধন করতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করে সেলিম ওসমান বলেন, আমি গর্ববোধ করি নারায়ণগঞ্জের হোসিয়ারী সমিতি থেকে যেটা যাবে তার ভবনটি সমস্ত কার্যক্রম যেন নারায়ণগঞ্জ থেকে হয়। বহু চড়াইউৎরাই পেরিয়ে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। আজকে আমরা বিল্ডিংটা উদ্বোধন করেছি। আমাদের সদস্যদের টাকা ৪৫ কোটি টাকা খরচ করে ৭ম তলা ভবনটি হয়েছে। আর এই ভবনটি উদ্বোধন করছেন এমন একজন ব্যক্তি যার মাধ্যমে আমরা ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার সাথে ব্যবসা করতে পারছি।
তিনি বলেন, অনেকেই অনেক কথা বলেন। উনার কাছ থেকে সময় নিতে আমার অনেক সময় লেগেছে। উনি আসবেন শুনে শামীম ওসমানের কাছে অনুরোধ করেছিলাম আমি উনার মতো একজন মানুষ চাই এটার উদ্বোধন করার জন্য।
সেলিম ওসমান বলেন, বাংলাদেশের কোথাও আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না ৪৭টি সংগঠন একসাথে বসে এলাকার সমাস্যার সমাধান করেন। একমাত্র নারায়ণগঞ্জেই রয়েছে যে কোনো ব্যবসা সংগঠন আমরা সম্মিলিতভাবে সমস্যার সমাধান করবো। আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করতে পেরেছি। আজকে দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে রপ্তানি করে বৈদিশিক মুদ্রা কামাই করতে পারছি। এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের একটি জিনিসের দরকার সেটা হলো নিরাপত্তা। আমরা যেন শান্তিপূর্ণভাকে ব্যবসা করে যেতে পারি। অপরাজনীতি যেন নারায়ণগঞ্জে না থাকে। প্রত্যেকেই আমরা রাজনীতি করি বা না করি অপরাজনীতি যেন সৃষ্টি না হয় এজন্য প্রত্যেককে সহযোগিতা করতে হবে। এমন কাজ করবেন না কোন ব্যবসায়ী অপরাজনীতি করার জন্য পকেট থেকে পয়সা দিয়ে দিবেন। তাহলে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা করতে পারবেন না। আমরা সবাই একসাথে আছি। সবাই কাজ করবেন আবারও যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে উনাকেও যেন এ বিল্ডিংয়ে উপস্থিত করতে পারি।
আপনার মতামত লিখুন :